নরসিংদীর রায়পুরায় একটি গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা প্রায় সারা বছরই কর্দমাক্ত থাকে। রাস্তাটি উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের পাহাড়কান্দি গ্রামের লোপার বাড়ির মোড় থেকে পাহাড়কান্দি মধ্যে পাড়া হয়ে আনারাবাদ মাঠ পর্যন্ত। প্রায় দুই কিলোমিটার এই রাস্তাটি বর্ষাকালে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। তা ছাড়া বছরের অন্য সময়েও সামান্য বৃষ্টি এলে একই অবস্থা তৈরি হয়। তখন যানবাহন দূরে থাকা হেঁটেও চলাচল করা যায় না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিলেও রাস্তাটি পাকা করার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি ওই রাস্তায় গেলে দেখা যায়, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে গেছে। তখন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে রাস্তার কাঁদায় আটকে গেলে কয়েকজনকে ঠেলতে দেখা যায়। তা ছাড়া রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে ছোট বড় গর্ত। বৃষ্টি এলে এসব গর্তে পানি জমে যায়।
এই রাস্তার পাশের বাড়িগুলোর লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই এলাকায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। এই পথেই রয়েছেন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তিনটি মসজিদ। এই পথেই মির্জাপুর, সাপমারা, নীলকুঠি, পাহাড় কান্দিসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ চলাচল করে। প্রতিনিয়ত মোটরসাইকেল,বাই সাইকেল, অটোরিকশা, ভেন গাড়িসহ ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু রাস্তার এমন অবস্থার কারণে সবাইকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মুছাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই রাস্তা বেহাল। এই এলাকার মানুষের একটাই দাবি রাস্তাটি পাকা করা হোক। কিন্তু দুঃখের বিষয় নির্বাচন আসে, নির্বাচন চলে যায়। কিন্তু এ রাস্তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে জনগণের কাছে আমাদের কৈফিয়ত দিতে হয়।’
রমিজ উদ্দিন নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বর্ষা এলেই এই রাস্তায় চলাচলে ভোগান্তি বাড়ে। তা ছাড়া বছরের অন্য সময়েও যখনই বৃষ্টি আসে তখনই এই রাস্তার এমন অবস্থা হয় যে যান বাহন দূরে থাক হেঁটেও চলাচল করা যায় না। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাসই দেন। নির্বাচন চলে গেলে আর কারও খবর পাওয়া যায় না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই পথে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের নিয়ে যাতায়াতের সময়। শুকনো মৌসুমেও রাস্তার গর্তে যানবাহনের যে ঝাঁকুনি হয় তাতে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। রোগীর কথা নাই বা বললাম। আর বৃষ্টি এলে, রাস্তার এমন অবস্থার কারণে রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার মতো গাড়িও পাওয়া যায় না।’
মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘রাস্তাটি পাকা করণের জন্য আমার চেষ্টার কোনো কমতি নেই। দেড় বছর আগে উপজেলার প্রকৌশলী কাছে শুনেছি, এই রাস্তার জন্য চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। এর বারবার উপজেলা অফিসে কাজের অগ্রগতির খোঁজ খবর নিচ্ছি। এখন শুনছি করোনার কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রতিনিয়ত এ নিয়ে আমার কথা শুনতে হচ্ছে। দ্রুত এই রাস্তাটি পাকা না করলে জনগণের কষ্ট আরও বেড়ে যাবে।
মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে উপজেলার প্রধান প্রকৌশলী শামীম ইকবাল মুন্না বলেন, ‘মুছাপুরের প্রায় দেড় কিলোমিটারের এই রাস্তাটি সংশোধিত ডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা আছে। রাস্তার পাকা করারা কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’