নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘আমি যখন পৌরসভা নির্বাচনে পাস করলাম, তখন আশিক হত্যাকাণ্ড হয়। সেই আশিক হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম। ওর বাবা-মা মামলা করেছিল। থানা থেকে বলেছিল, আজমেরির নাম বাদ দিতে হবে। যাকে এক নম্বর আসামি করা হলো, সেই সিজার এখন নারায়ণগঞ্জ শহরে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু প্রশাসন তাদের চোখে দেখে না। একইভাবে ত্বকী হত্যাকারীদেরও চোখে দেখে না।’
সোমবার নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় শেখ রাসেল পার্কে আয়োজিত শিশু সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন ত্বকী হত্যার নবম বার্ষিকী উপলক্ষে শিশু সমাবেশ ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ।
মেয়র বলেন, ‘নাকের ডগার ওপর দিয়ে শত শত হুন্ডা বাহিনী নিয়ে পত্রিকা অফিসে আক্রমণ করে। তারপরও প্রশাসন তাদের দেখে না, তাদের বিচার হয় না। কেন হয় না? ওই যে এই শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত ফ্যামিলি। যারা কথায় কথায় বলে, তাদের মতো ধনী সম্প্রদায় নারায়ণগঞ্জ শহরে নাকি নাই। তো ধনী হলো কোত্থেকে? যিনি তোলারাম কলেজে টাকার জন্য ফরম ফিলাপ করতে পারেন নাই। আজকে উনি কোটি কোটি টাকার মালিক। আবার অন্যের দিকে চোখ তোলে বাড়ি করল কীভাবে?’
আইভী বলেন, ৯ বছর ধরে ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে যাচ্ছি। কোনো এক অজানা কারণে ত্বকী হত্যার বিচার হচ্ছে না। এত আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে, কিন্তু ত্বকী হত্যাকাণ্ডের কেন হচ্ছে না?
সম্প্রতি আইভীকে ইঙ্গিত করে শামীম ওসমানের দেওয়া বক্তব্যের বিপরীতে আইভী বলেন, ‘আমরা বাবার জায়গা বিক্রি করে বাড়ি করেছি। আপনার মতো চুরি করে নয়, দুর্নীতি করে নয়। কীভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেলেন? সেই তথ্য নারায়ণগঞ্জবাসী জানতে চায়। দুদকের ভয় দেখান, অনেকের ইনকাম ট্যাক্সের ফাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করেন। যারা আমার নির্বাচন করেছে, তাদের ইনকাম ট্যাক্সের ফাইল রাজাকার পুত্র কাজলের মাধ্যমে রাইফেল ক্লাবে বসে থেকে আপনি কলকাঠি নাড়ছেন।
সভাপতির বক্তব্যে রফিউর রাব্বি বলেন, ‘আমাদের দেশে শুভবুদ্ধি ও শুভচিন্তার মানুষগুলোর টুঁটি চেপে ধরে। তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। নারায়ণগঞ্জে এর বীভৎস রূপটি হচ্ছে ওসমান পরিবার। তারা নারায়ণগঞ্জের মানুষকে ভয় ছড়িয়ে দিয়ে ভয়ের রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব কবি হালিম আজাদ, শিল্পী জাহিদ মোস্তফা, চিত্রশিল্পী অশোক কর্মকার, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম, খেলাঘরের জেলা সভাপতি রথীন চক্রবর্তী।