বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পদ্মনগর গ্রাম থেকে নরেন্দ্রপুর গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটি হয়ে পড়েছে বেহাল। ৮০০ মিটার এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের চলাচল।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় বছরের ৪ মাস পানিতে ডুবে থাকে। আর বাকি ৮ মাস থাকে হাঁটুকাদা।
এই রাস্তার পাশে রয়েছে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, মসজিদ ও দোকানঘর। যার ফলে প্রতিনিয়ত এই এলাকার মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় কাজে বের হলেই পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে অতিদ্রুত রাস্তাটি উঁচু করে ইট-সলিংয়ের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে পদ্মনগর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘পদ্মনগর গ্রামের বুলবুলের ঘেরের পাশ থেকে নরেন্দ্রপুর রায়বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দুই গ্রামের মানুষ নিজেদের যোগাযোগ রক্ষার জন্য এই রাস্তাটি ব্যবহার করে। এ ছাড়া এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাওয়া-আসা করে। এই সরকারের আমলে বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হলেও এই রাস্তাটির সংস্কার করা হয়নি।’
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আ. রাজ্জাক আলী বলেন, উত্তর ভান্ডারখোলা, পদ্মনগর, নরেন্দ্রপুরসহ আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষের চলাচলের জন্য গুরুত্বর্পূণ রাস্তা এটি। কিন্তু চলাচলকারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বর্ষা মৌসুমে পড়তে হয় চরম বিপাকে। রাস্তাটি দ্রুত ইট-সলিং করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
মোল্লা মোতাহার হোসেন বলেন, ‘প্রধান সড়কে যাওয়ার জন্য আমাদের বিকল্প রাস্তা না থাকায় বছরের পর বছর আমরা এ রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। প্রতিবছর আমরা সবাই মিলে রাস্তা সংস্কার করি। দেশে এত উন্নয়ন হয় অথচ আমাদের মাত্র ৮০০ মিটার রাস্তাটি ইট-সলিং হয় না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নরেন্দ্রপুর এলাকার এক ব্যক্তি জানান, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর কচুয়া উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু এই এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ গোপালপুর ইউনিয়নের পদ্মনগর বুলবুল সরদারের ঘেরসংলগ্ন ব্রিজের পাশ থেকে মো. মোস্তফা শেখের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটির কোনো কাজ হয়নি।
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, রাস্তাটি বছরের আট মাস পানি ও কাদায় নিমজ্জিত থাকে। চলাচলের অনুপযোগী এই রাস্তা দিয়েই তাঁদের সন্তানদের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে কষ্ট হয়। কাদাভরা রাস্তা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার কারণে কখনো কখনো বই-খাতাও ভিজে যায়, জামাকাপড়ে কাদা মেখে যায়।
কাদের মোল্লা নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য স্থানীয় অনেক জনপ্রতিনিধির কাছে আমরা গিয়েছি। বারবার সংস্কারের আশ্বাস দিলেও আসলে কোনো কাজই হয়নি। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে রাস্তা সংস্কারের বিকল্প নেই।’
এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা সরোয়ার বলেন, ‘কিছুদিন হয়েছে আমি উপজেলার দায়িত্বভার নিয়েছি। রাস্তাটি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। স্থানীয় বাসিন্দারা আবেদন করলে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যতদ্রুত সম্ভব রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা হবে বলে।’