খালের মুখ উন্মুক্ত করে দেওয়ায় সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার প্রায় ৫০০ একর জমির পাকা ধান পানি থেকে মুক্ত হয়েছে। পুরো উপজেলার পানিপ্রবাহের একমাত্র পথ গান্ধাইল ইউনিয়নের মিরারপাড়া গ্রামের এই বানিয়াজান খাল। গত বছর পাঁচ গ্রামের কৃষকদের কষ্ট দূর করতে বিএডিসি পানাসি প্রকল্পের মাধ্যমে বানিয়াজান খালটি খনন করা হয়।
জানা গেছে, এ বছর খালটির মুখে মাটি ভরাট করে পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ করে দেন বরইতলা নয়াপাড়া গ্রামের এলাহী ও জিন্নাহ। ফলে কয়েক দিনের বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় ফসলি জমিগুলোতে।
খবর পেয়ে গত রোববার দুপুরে কাজীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী সেখানে যান। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখতে বাঁধ কেটে দেওয়ার নির্দেশ দেন তাঁরা। পরে রাতেই পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়ে আসে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কাজীপুরে লক্ষ্যমাত্রার বেশি ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় কৃষকের মুখেও দেখা দিয়েছে হাসি। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির পানি বানিয়াজাল খাল দিয়ে বের হতে না পারায় খেতের সব পাকা ধান তলিয়ে যায়।
মিরারপাড়া গ্রামের কৃষক মোকছেদ আলী বলেন, ‘জিন্নাগোরে মেলা কইছি ভরাট না করতে, কিন্তু আমাগোরে কথা শোনে নাই। পাকা ধান ডুইবা গ্যাছে। বান্ধা কাইটা দেয়ার পরে ধান একটু জাগা শুরু কইরছে।’
খালের মুখ বন্ধ করার বিষয়ে জিন্নাত বলেন, ‘সরকারি জায়গায় আমরা মাটি ভরাট করেছি। আর পানিপ্রবাহের জন্য আমাদের ব্যক্তিমালিকানা জায়গা দিয়ে দিয়েছি। সেখান দিয়ে খালের মুখ বের করে দেওয়া হয়েছে। সরকার যখন খাসজমি বের করবে, তখন ছেড়ে দেব।’
উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী বলেন, খাল খননের সময় জিন্নাহ ও এলাহী কথা দিয়েছিলেন, পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে খালের মুখ খোলা রাখবেন, কিন্তু কথা রাখেননি তাঁরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, কৃষকের সুবিধার জন্য খাল খনন করা হয়েছে, সেটা বন্ধ করার সুযোগ নেই। পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে বানিয়াজান খালের মুখ খননযন্ত্র দিয়ে কেটে উন্মুক্ত করা হয়েছে।