খাগড়াছড়ির রামগড়ের সুকেন্দ্র ছড়ায় কালভার্ট নির্মাণের ২০ বছর পরেও সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়নি। কালভার্টের সংযোগস্থলে মাটি ভরাট না করায় অকেজো হয়ে পড়েছে এটি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে ৪টি গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার। দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম। কালভার্টটি পৌরসভা ও ইউনিয়নের সীমানার মাঝামাঝিতে অবস্থিত হওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।
জানা গেছে, রামগড় পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের শেষ প্রান্তে এবং রামগড় ইউনিয়নের শুরুতেই সুকেন্দ্র ছড়ার ওপর কালভার্টটি অবস্থিত। প্রায় ২০ বছর আগে পুরো এলাকা রামগড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওতায় থাকা অবস্থায় কালভার্টটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন তৎকালীন ইউপি সদস্য (বর্তমান প্রয়াত) কিশোর ত্রিপুরা। কালভার্টর মূল অংশের কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক তৈরি করা হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, অংহলাপাড়া, শামুকছড়া, কর্মচানপাড়া ও চিনছড়িপাড়া নামক ৪টি গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবারের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। কাঁচা সড়কের মধ্যে গর্ত ও ধুলাবালির কারণে চলাচল করা কঠিন। ব্রিজের মূল অংশের কাজ শেষ হলেও দুই পাশের সংযোগ সড়কের কোনো উদ্যোগই নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে শুষ্ক মৌসুমে কোনোভাবে চলতে পারলেও বর্ষায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন ৪ গ্রামের মানুষ।
অংহলাপাড়ার বাবুল ত্রিপুরা বলেন, সরকারি টাকা অপচয় করে রাস্তাবিহীন কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এই রাস্তায় চলাচলকারী কৃষকদের উৎপাদিত শস্য পরিবহনের ক্ষেত্রে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে জগন্নাথপাড়ার মোড় ও আদর্শগ্রামের রাস্তা দিয়ে বাজারে যেতে হয়। অথচ এই কালভার্ট ব্যবহারের উপযোগী হলে এবং রাস্তাটা ঠিক থাকলেই কম খরচে এই কাজ করা যেত।
নুরুল আফসার বলেন, ‘আমরা অনেকবার কষ্টের কথা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছি। অনেক অনুরোধ করেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করাতে পারিনি। এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার, পৌর কাউন্সিলর—সবাই বলে রাস্তা হবে, এই সান্ত্বনায় কেটে গেছে ২০ বছর।’
রামগড় পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল হক বলেন, ‘স্থানীয়দের দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনে নির্বাচিত হওয়ার পরেই পৌরসভার অধীনে যে এলাকা রয়েছে, সেটি পরিদর্শন করেছি। সামনের বাজেটে বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হবে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত এ রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।’
পৌর মেয়র রফিকুল আলম কামাল বলেন, ‘নতুন দায়িত্ব নেওয়ায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে পারিনি। তবে খুব দ্রুত এ কালভার্টর মাটি ভরাট ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’ মেয়র জানান, এলাকায় আরও কয়েকটি সংযোগ সড়কবিহীন সেতু রয়েছে। ক্রমান্বয়ে ওই সেতুগুলোতেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বপ্রদীপ ত্রিপুরা জানান, এলাকাটি পৌরসভা ও ইউনিয়নের মাঝামাঝিতে পড়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা পরিষদের সমন্বয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।