Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

‘বাথরুম ও কিচেন ব্যবহার করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

‘বাথরুম ও কিচেন ব্যবহার করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ’

শৌচাগারের (ওয়াশরুম) দেয়ালে সাঁটানো একটি কাগজ। তাতে লেখা ‘গণরুমের মেয়েদের প্যাড ফেলা ছাড়া বাথরুম এবং কিচেন ব্যবহার করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।’ কাগজটি দেখিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপসী রাবেয়া হলের গণরুমের এক ছাত্রী বলেন, ‘বাবা দিনমজুর। অনেক কষ্টে থাকার একটা সিট পেয়েছি। এক সিটে দুজন ভাগাভাগি করে থাকি। কিন্তু এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা সিনিয়ররা আমাদের ওয়াশরুম ও কিচেন (রান্নাঘর) ব্যবহার করতে দেন না।’

এমন সমস্যা কেবল এই ছাত্রীর নয়, রাবির প্রায় দেড় হাজার ছাত্রীর। পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা না থাকায় বর্তমানে ৬টি আবাসিক হলের গণরুমে গাদাগাদি করে থাকেন তাঁরা।

রাবির ৯ হাজার ৩৪৬ জন ছাত্রীর বিপরীতে ৬টি আবাসিক হলে আসন মাত্র ৪ হাজার ৩৫৪টি। মোট ছাত্রীর তুলনায় ৪৬ শতাংশ পান আবাসন সুবিধা।

ছাত্রীরা জানিয়েছেন, গণরুমগুলোয় পড়াশোনার পরিবেশ নেই। ছাত্রীদের বেড শেয়ার করে থাকতে হয়। আছে পোকামাকড়ের উপদ্রব। সেই সঙ্গে চলে সিনিয়রদের দাপট। তাঁদের অনুমতি ছাড়া জুনিয়র শিক্ষার্থীরা কিছুই করতে পারেন না। সিনিয়রদের বিরুদ্ধে কথা বললেই করা হয় র‍্যাগিং। এতে জুনিয়ররা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলোর প্রতিটিতেই রয়েছে ছাত্রীদের জন্য আলাদা গণরুম। এর মধ্যে মন্নুজান হলের চারটি গণরুমে প্রায় দুই শতাধিক ছাত্রী, তাপসী রাবেয়া হলের দুইটি গণরুমে ২৮০, খালেদা জিয়া হলের দুটি গণরুমে ২০০ শিক্ষার্থী থাকেন। এ ছাড়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের একটিমাত্র গণরুমে এ বছর ২১০ জন ছাত্রীকে আবাসিকতা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে বেগম রোকেয়া হলে পাঁচটি রুমে ২৫০ জন ছাত্রী ও রহমতুন্নেছা হলে কয়েকটি গণরুমে প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি ছাত্রী হলের গণরুমে প্রায় ১ হাজার ৩৯০ শিক্ষার্থী থাকেন।

সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তাপসী রাবেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী মহল বলেন, গণরুমে ছাত্রীরা একটি সিটে দুজন করে থাকেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের চারটি ব্লকের প্রতি ফ্লোরে একটি করে হিটারের চুলা রয়েছে। শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় সবাই রান্না করতে পারেন না।

খালেদা জিয়া হলের এক ছাত্রী বলেন, ‘হলের গণরুমে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। এক বেডে দুজন করে আমরা থাকি। পরিবেশ না থাকায় লেখাপড়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সিঙ্গেল বেডে দুজন থাকতে হয়, শেয়ার করতে হয় পড়ার টেবিল, যা আমাদের প্রধান সমস্যা। শিক্ষার্থীদের তুলনায় ওয়াশরুম না থাকায় আগে থেকে সিরিয়াল দিতে হয়।’

এই ছাত্রী আরও বলেন, ‘বাইরে থেকে পরিবারের কেউ আমাদের কাছে এলে গণরুমগুলোকে বস্তির সঙ্গে তুলনা করেন। আমাদের গণরুমে ছাত্রীদের রান্নার ব্যবস্থা নাই। সিনিয়রের চুলা ব্যবহার করে রান্না করতে হয়।  একটু ভুল ভ্রান্তি হলে সিনিয়রদের রোষানলে পড়তে হয়।।’

হলের প্রাধ্যক্ষ সৈয়দা নুসরাত জাহান বলেন, ‘আমরা সিট দিতে বাধ্য হই। আর গণরুমে কিচেন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সিনিয়ররা একটু প্রভাব দেখানোর অভিযোগ সত্য, তবে আমরা হল কর্তৃপক্ষ সর্বদা বিষয়টা দেখভাল করি। এসব সমস্যা দূর করতে ছাত্রীদের শতভাগ আবাসন করতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হল নির্মাণাধীন রয়েছে। এ হলের মোট ১ হাজার সিট রয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য আরও হল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এই হল দুটি হয়ে গেলে ছাত্রীদের গণরুমের সংকট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।’ 

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ