ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় সরকারি খাল দখল করে পুকুর খনন ও মাছ চাষের অভিযোগ পাওয়া গেছে জামাল উদ্দিন বাদশা নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। দখল করা পুকুরের ছবি তুলে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় এম এ বারেক রানা নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মুক্তাগাছা উপজেলার দাওগাঁও ইউনিয়নের পাহাড়পাবইজান গ্রামে।
পরে এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে ওই প্রতিবন্ধী যুবক একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোমানা রিয়াজ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাশিমপুর ও দাওগাঁও ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী চাকদার খাল দিয়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার জনবসতি এলাকার পানি স্থানীয় বানার নদীতে এসে নামে।
দাওগাঁও ইউনিয়নের পাহাড়পাবইজান ও কাশিমপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর গ্রামের পানিনিষ্কাশনের একমাত্র খাল এটি। ১০-১২ বছর আগে শুষ্ক মৌসুমে খালে পানি না থাকায় কাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ সরকারের ছেলে জামাল উদ্দিন বাদশা খালে বোরো ধান চাষ শুরু করেন।
ধান চাষ করায় বর্ষাকালে ওই সব এলাকার পানিনিষ্কাশনে তেমন কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু কয়েক বছর আগে জামাল উদ্দিন বাদশা খালে ভেকু দিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষ শুরু করেন।
প্রতিবন্ধী এম এ বারেক রানা বলেন, ‘জামাল উদ্দিন বাদশা সরকারি খাল দখল করে পুকুর খনন করেন। আমি খালটি উদ্ধারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা করে জামাল উদ্দিন বাদশার ছেলে তানভির। প্রতিকার চেয়ে মুক্তাগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করায় আমাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করবে বলে তানভির এখন লোকের কাছে বলে বেড়াচ্ছে।’
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পাহাড়পাবইজান গ্রামের বাসিন্দা কৃষক জয়জুর রহমান বলেন, ‘আমি ৫-৬ বছর ধরে বর্ষাকালে কোনো ফসল করতে পারছি না। অল্প বৃষ্টি হলেই আমার বাড়িতে পানি ওঠে। বাদশা মিয়া আমাদের খালে পানি ছাড়তে দেয় না।’
জামাল উদ্দিন বাদশা বলেন, ‘এটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে, আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। এটা খাস জায়গা না, এটা আমার নিজস্ব জমি। আমার বাবার জমি।’
খাল দখল করে পুকুর খনন করার বিষয়ে দাওগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার জামাল উদ্দিন বাদশা বলেন, ‘সরকারি খাল দখল করে পুকুর খননের বিষয়টি আমি জেনেছি। এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘবে, যত দ্রুত সম্ভব খালটি উদ্ধারে ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা হবে।’
এ ব্যাপারে মুক্তাগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোমানা রিয়াজ বলেন, ‘খাল দখল করে মাছ চাষের একটি অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে সার্ভেয়ার ওই জায়গা পরিদর্শন করে এসেছে। আমরা দখলদারকে শুনানির জন্য ডেকেছি, সে স্বেচ্ছায় খালের জায়গা না ছাড়লে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’