বরিশালের আগৈলঝাড়ার অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই খেলার মাঠ। খেলার মাঠ না থাকায় টিফিনে বিরতির সময় শ্রেণিকক্ষে বসেই সময় পার করছে ছোট ছোট কোমলমতি শিক্ষার্থী। মাঠের অভাবে বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাও এক-তৃতীয়াংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ না থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে এবং শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৫টি ইউনিয়নের ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই কোনো খেলার মাঠ। যে কারণে টিফিন কিংবা অন্য কোনো বিরতির সময় শ্রেণিকক্ষে বসেই সময় পার করে শিক্ষার্থীরা। মাঠের অভাবে বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করাও সম্ভব হচ্ছে না। খেলার মাঠ না থাকায় আন্তজেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দৌড়সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বাছাই হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাশের যান চলাচলের রাস্তায়। সেখানে দৌড়সহ বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব করায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
জানা যায়, উপজেলার উত্তর শিহিপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গৈলা নবযুগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাগুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বসুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাকাল হাই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চলাইরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৪০টি বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ নেই পশ্চিম গোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দর্জিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চলাইরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সজল দাস, অবনী মণ্ডল, অভি শর্মা, খালিদ হাসান, তমা বৈরাগী, শিবানী রায়, শাহানাজ আক্তারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তাদের বিদ্যালয়ে মাঠ না থাকায় টিফিনে বিরতির সময় খেলাধুলা করতে পারে না তারা। শ্রেণিকক্ষেই সময় কাটাতে হয়।
বাকাল হাই সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃণালিনী তালুকদার ও পূর্ব সুজনকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিরাট চন্দ্র ভদ্র জানান, অনেক বিদ্যালয়ের সামনেই খেলার মাঠ থাকে। কিন্তু তাঁদের বিদ্যালয়ের সামনে কোনো জায়গা না থাকায় সড়কের ওপর শিশুদের খেলা ও শরীরচর্চা করাতে হয়।
ছোট বাশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গীতা বিশ্বাস জানান, শিশুদের খেলার মাঠ নির্মাণ করার জন্য বিদ্যালয়ের পাশে জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু জমি নিচু হওয়াতে মাটি ভরাটের কাজ করতে হবে।
নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিনু সেন শর্মা শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশের জন্য ওই সব বিদ্যালয়ে খেলার মাঠের দাবি জানান।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, উপজেলার ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক-তৃতীয়াংশে খেলার মাঠ নেই। যেহেতু অনেক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ তৈরি করার মতো জায়গা রয়েছে, তাই অতি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করার জন্য মাঠের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, উপজেলার যে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ নেই সে সব বিদ্যালয়ে অতি দ্রুত খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা হবে।