হোম > ছাপা সংস্করণ

বাঁধের মাটি গিলছে অবৈধ ইটভাটা

মো. হোসাইন আলী কাজী, আমতলী (বরগুনা)

বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে অবৈধ একটি ইটভাটায় মাটি নেওয়া হচ্ছে। এতে বাঁধটি নড়বড়ে হয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে। 

স্থানীয় লোকজন জানান, বর্ষায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকলে ৩০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়বে। ভাটার মালিকের দাবি, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে ‘ম্যানেজ’ করেই এটি করা হচ্ছে। তাঁর এ দাবি অস্বীকার করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুলিশাখালী গ্রামের এনবিএম নামে ওই ইটভাটার মালিক ওই গ্রামের অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের স্ত্রী জাহানারা ইসলাম। এক বছরের জন্য তিনি একই গ্রামের নুর উদ্দিনের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। ২০১৩ সালে ইটভাটাটি নির্মাণ করা হয়। ইটভাটার পশ্চিম পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাঁধের ভেতরের অংশের মাটি কেটে নুর উদ্দিন ও তাঁর লোকজন ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছেন। এতে প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করলে ওই ইউনিয়নের ফসলি জমি ও অন্তত ৩০ হাজার মানুষ দুর্যোগের ঝুঁকিতে পড়বে। এ ছাড়া ওই ইটভাটার পাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি। ভাটার ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। নুর উদ্দিন প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁরা প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। কয়েকজন প্রতিবাদ করায় নুর উদ্দিন ও তাঁর লোকজন মামলার হুমকি দিচ্ছেন। 

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধজুড়ে ওই ইটভাটার কর্মযজ্ঞ। বাঁধের ওপরে ইটভাটার মাটি, কয়লা, পোড়া ইট ও কাঁচা ইট রাখা হয়েছে। আরেক পাশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেতরের অংশের মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হয়েছে।

ইটভাটার পাশে বসবাসরত ঝরনা, আসমাসহ কয়েকজন বলেন, বাঁধের মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে বাঁধটি অত্যন্ত নড়বড়ে। বন্যা হলে ওই বাঁধ ভেঙে পানিতে এলাকা তলিয়ে যাবে। ইটভাটার ধোঁয়ায় শিশুরা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিতে ভুগছে। গাছপালা ও ঘরবাড়ি ইটভাটার ধুলায় একাকার হয়ে যায়। 

গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, ইটভাটা প্রস্তুত আইন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সব বিধি লঙ্ঘন করে এনবিএম ভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। ওই ইটভাটার ৫০ গজ দূরে তিন দিকে গ্রাম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এক পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ইটভাটা কর্তৃপক্ষ ওই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশের মাটি কেটে ভাটায় নিয়ে গেছে। এতে বাঁধটি অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান চেয়ারম্যান। 

ইটভাটার মালিক নুর উদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে টাকা দিয়ে ইটভাটা চালাই। প্রশাসন ম্যানেজ থাকলে কেউ কিছু করতে পারে না।’ পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশালের উপপরিচালক এইচ এম রাশেদ বলেন, ‘লোকালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসংলগ্ন ইটভাটা নির্মাণ করায় এনবিএম নামের ওই ইটভাটার ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে।’ 

বরগুনা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী আজিজুর রহমান সুজন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘প্রশাসন ম্যানেজ করার প্রশ্নই আসে না। শিগগির অভিযান চালিয়ে ওই ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ