কিছুটা অস্থিরতা থাকলেও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে এ সপ্তাহে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হয়েছে। সামনে কোম্পানিগুলো একে একে গত অর্থবছরে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে লাভ-ক্ষতির হিসাব করতে থাকা বিনিয়োগকারীরা ভালো মুনাফার আশায় নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারের প্রতি ঝুঁকেছেন বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। এর ফলে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৮৩ শতাংশ শেয়ারের দাম কমলেও সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে।
ইবিএল সিকিউরিটিজের বিশ্লেষণ বলছে, বাজারের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সুবিধা নিয়ে এই সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মধ্যে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। ফলে অনেকগুলো শেয়ারের দর সংশোধনের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ পার করেছে পুঁজিবাজার।
এই প্রবণতাকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন ডিএসইর পরিচালক আহমদ রশীদ লালী। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, বাজার সার্বিকভাবে ভালো ছিল।
বাজারে যে উত্থান-পতন, সেটা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। বাজার স্বাভাবিক ছিল, যখন মূল্য সংশোধন বা মুনাফা তুলে নেওয়ার সময়, তখন তা হয়েছে।
বাজারে স্বল্প মূলধনী কোম্পানির দাম বেশি বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা কম টাকা খাঁটিয়ে বেশি মুনাফা করতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। ৫০০ টাকার শেয়ার কিনে ১০ টাকা লাভ করার বদলে ১০০ টাকার কিনে ৫ টাকা লাভ করতে চাওয়া যৌক্তিক।’
ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই সপ্তাহে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ৫১ পয়েন্ট বা দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ৮৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে এই সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮১৮ কোটিতে নেমেছে। বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট ছিলেন ওষুধ ও রসায়ন খাতে।
মোট লেনদেনের সর্বোচ্চ ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ ছিল এই খাতে। এর পরের শীর্ষ দুই খাত ছিল যথাক্রমে বিবিধ (১৪ দশমিক ৬ শতাংশ) ও প্রকৌশল খাত (১১ দশমিক ৮ শতাংশ)। বেশির ভাগ খাতের শেয়ারের দরপতনের মধ্যে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি ছিল সেবা খাতে। এই খাতের ৯ দশমিক ৪ শতাংশ দর কমেছে, যেখানে পাট খাতের সবচেয়ে বেশি ১১ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে সপ্তাহের শেষ দিন গত বৃহস্পতিবারও আগের দিনের মতো ডিএসইতে দর বাড়ায় ওষুধ ও রসায়ন খাতের প্রাধান্য ছিল। দর বাড়ার শীর্ষ ১০ কোম্পানির প্রথম দুটি ওরিয়ন গ্রুপের ওরিয়ন ইনফিউশন ও ওরিয়ন ফার্মা। ওরিয়ন ফার্মার শেয়ারদর অস্বাভাবিক বাড়ায় কারণ জানতে চেয়েছিল ডিএসই। জবাবে এদিন কোম্পানিটি জানিয়েছে, দর বাড়ার বিষয়ে তাদের মূল্য সংবেদনশীল কোনো তথ্য নেই।