যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে স্নাতক শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী মো. রাকিবুল ইসলাম (২৫) শখের বশে করেছেন কুলের বাগান। বাবা-মায়ের কাছে থেকে অনুমতি নিয়ে তিন বিঘা জমিতে রোপণ করেছেন পাঁচ শতাধিক কুলের চারা। এ বাগান দেখতে প্রায় নিয়মিত লোকজন ভিড় করছেন। আলোচিত এ কুলের বাগানটি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার এড়েন্দা গ্রামে।
মো. রাকিবুল ইসলামের বাবা মো. জহর শেখ লোহাগড়া উপজেলার এড়েন্দা এলাকার বাসিন্দা। মো. রাকিবুল ইসলাম শখের বশে কাশ্মীরিকুল, থাই, সিডলেস ও বল সুন্দরী জাতের পাঁচ শতাধিক চারা মেহেরপুর থেকে এনে রোপণ করেন। আট মাসের মাথায় শুরু হয়েছে ফলন।
মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমি যশোর এক আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে কুল বাগান দেখি। বাড়ি এসে আমি বিষয়টি মা-বাবাকে জানালে তাঁরা উৎসাহের পাশাপাশি অর্থসহ জমির জোগান দেন। আমি তিন বিঘা জমিতে পাঁচ শতাধিক বল সুন্দরী, কাশ্মীরি, থাই ও সিডলেস জাতের কুলের চারা রোপণ করি। মাত্র আট মাসের মাথায় শুরু হয়েছে ফলন।’ উপজেলার অন্য বেকার যুবকেরা এ ধরনের আরও কুল বাগান করে নিজেদের ভাগ্য বদলাবেন এমনটি প্রত্যাশা রাকিবুলের।
। মো. রাকিবুল ইসলামের এ সাফল্যে ইতিমধ্যেই এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এলাকার অনেক যুবক কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
শিক্ষার্থী মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, ‘তিন বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছি। এ বাগানে নিয়মিত ৭ জন লোক কাজ করে। অনেকে আমার কাছে পরামর্শ নিতে আসে। আমি তাঁদের পরামর্শ দেই। বিশেষ করে যারা বেকার তাঁদের আমি কুল চাষের পরামর্শ দেই। এতে একদিকে নিজের বেকারত্ব ঘুচবে। পাশাপাশি আরও অনেককে তাঁর কুল বাগানে কাজ দিতে পারবেন। আমি বেকার যুবকদের কম দামে চারা দেওয়াসহ পরামর্শ দেওয়ার কথা এলাকায় জানিয়ে দিয়েছি।’
রাকিবুলের বাবা মো. জহর শেখ বলেন, ‘কলেজ পড়ুয়া ছেলের কৃষির প্রতি ঝোঁক দেখে খুশি হয়েছি। শিক্ষিত বেকার যারা তারাও এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারে।’
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রইচউদ্দিন বলেন, ‘লোহাগড়া উপজেলায় প্রথমবারের মতো কাশ্মীরি কুলসহ বিভিন্ন জাতের কুল আবাদ হচ্ছে। আকারে বড় ও সুস্বাদু কাশ্মীরি কুলের বেশ চাহিদা রয়েছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে কৃষকদের পরামর্শ দেন। এই কাশ্মীরি কুলসহ বিভিন্ন জাতের কুল লোহাগড়ায় রোপণ করে প্রাথমিকভাবে সাফল্য দেখা গেছে। এই কুল রোপণ ও চাষের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।’