কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে শীত উপেক্ষা করে বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। তবে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে একসঙ্গে বোরোর আবাদ শুরু হওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে।
বাজিতপুরের বেশির ভাগ শ্রমিক হাটে দিনমজুরে অভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।
জানা গেছে, বাজিতপুর উপজেলায় ১০ থেকে ১২টি স্থানে কৃষি শ্রমিকের হাট বসে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সরারচর, হামিপুর, পিরিজপুর, হিলচিয়া, বাজিতপুর বাজার, দিলালপুর ও পাটলী।
কৃষকেরা জানান, এখন বোরো আবাদের সময়। তাই বাজারে শ্রমিকের খুব চাহিদা। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শ্রমিকদের দর-কষাকষি করে কাজে নিতে হয়। দৈনিক জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মজুরি দিতে হয় তাঁদের। কিন্তু এরপরও অনেক সময় শ্রমিক পাওয়া যায় না।
সরেজমিনে গতকাল রোববার দেখা গেছে, ভোরের ট্রেনে ভাগলপুর রেল স্টেশনে এসে নামেন ৩০-৩৫ জন দিনমজুর। আগে থেকে সেখানে নানা বয়সের অর্ধ শতাধিক শ্রমিক সেখানে ছিলেন। এর মধ্য থেকে কৃষকেরা পছন্দের শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে কাজে নিয়ে যাচ্ছেন। কৃষি শ্রমিকের মূল্য চড়া হওয়ায় অনেক কৃষক দূরে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
সাদির চর গ্রামের কৃষক নুরু মিয়া বলেন, ‘আগে দৈনিক দুই বেলা খাবার দিয়ে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় কৃষি শ্রমিক পাওয়া যেত। এখন ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়ে বেশি টাকায় কামলা নিয়ে যাচ্ছি।’
ময়মনসিংহের গৌরীপুর থেকে আসা ৫৫ বছর বয়সী কৃষি শ্রমিক সুরুজ মিয়া বলেন, ‘আমার বয়স হয়েছে। এখন আর বেশি ভারী কাজ করতে পারি না। জীবিকার তাগিদে কাজ করতে এসেছি। এখন কামলার খুব চাহিদা। তাই আমার মতো বৃদ্ধও কাজ পায়। আগে অনেক বার এখানে এসে কাজ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে গিয়েছি।’
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. ইসরাফিল জাহান, এই বছর বাজিতপুর উপজেলায় ১২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। আমন মৌসুমে কৃষকেরা ধানের ভালো দাম পাওয়ায় বোরো ধান আবাদে আগ্রহ বেড়েছে। সমস্ত বাজিতপুরে এক সঙ্গে বোরো আবাদ শুরু হওয়ায় কৃষি শ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে। ভবিষ্যতে ধান কাটার মতো ধানের চারা রোপণের মেশিন চলে এলে শ্রমিকের অভাব অনেকটা পূরণ হবে।