ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট। এর মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে রয়েছে মাত্র ছয়টি শয্যা। অন্যান্য ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা মোটামুটি ঠিক থাকলেও শয্যার চেয়ে ছয় গুণ বেশি রোগীর চিকিৎসা চলছে শিশু ওয়ার্ডে। শীতের আবহাওয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুরোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।
এদিকে সাধারণ বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া শিশুরোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। গতকাল রোববার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচ শতাধিক রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে টিকিট কাটে। সেই তালিকা অনুযায়ী শূন্য থেকে ছয় বছর বয়সী দুই শতাধিক, ৭-১১ বয়সের দেড় শতাধিক শিশু, ১২-১৬ বয়সের অর্ধশতাধিক কিশোর-কিশোরী ও বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ চিকিৎসা নেন।
সাধারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ৩০০ শিশুরোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অসুস্থ শিশুদের আলাদা করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী গত ২৩ অক্টোবর রোববার ৪৬ জন, সোমবার ৩৬, মঙ্গলবার ৩৫, বুধবার ৪২, বৃহস্পতিবার ৪৫ ও গতকাল রোববার ৩৬ শিশুকে চিকিৎসা দেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ আরমান বিন আব্দুল্যাহ।
অন্যদিকে শিশু ওয়ার্ডে জন্য মাত্র ছয়টি শয্যা থাকলেও গত সপ্তাহ থেকে টানা ৪০ জনের বেশি শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সরা। এ জন্য তাঁদের বাড়তি কষ্ট করতে হচ্ছে। অনেকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছে।
গতকাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু ওয়ার্ডের বাইরে ও বারান্দায় কোনো স্থান ফাঁকা নেই। জায়গা না পেয়ে অনেকে মেঝেতে অবস্থান নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডের রোগী মহিলা ওয়ার্ড থেকে শুরু করে লেবার ওয়ার্ডে যাওয়ার পথে অবস্থান করায় চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে। মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে মাত্র চারজন নার্স দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অসুস্থ সন্তান নিয়ে আসা ইসমাইল হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরে হাসপাতালেই আছেন। রোগীর চাপ অনেক বেশি। তবে চিকিৎসকেরা আরও আন্তরিক হলে ভালো হতো।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ আরমান বিন আব্দুল্যাহ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুদের হাসপাতালে বাড়তি চাপ থাকে। এদের বেশির ভাগ ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। তবে এবার এর পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে গেছে। সবাই চেষ্টা করছে ভালো চিকিৎসা দিতে। তারপরও পরিবারের সবার উচিত শিশুদের দিকে বাড়তি খেয়াল রাখা, যা তাদের অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উৎপল দাশ বলেন, শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নেওয়া ছাড়াও সাধারণ ও জরুরি বিভাগে অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর কারণে মাঝেমধ্যে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এরপরও অনেকে বলেন, সঠিকভাবে চিকিৎসা পাচ্ছে না। তা ঠিক নয়। তাঁরা হাসপাতালে আসা রোগীদের সঠিক চিকিৎসা দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন।