জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
এক পাশে শিমুলবাগান। ওপারে ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়। মাঝে চোখজুড়ানো মায়াবী যাদুকাটা নদী। সব মিলেমিশে অপরূপ রূপে সেজেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মানিগাঁও গ্রামসংলগ্ন এই জয়নাল আবেদীন শিমুলবাগান। সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দল বেঁধে ছুটে আসছে হাজারো পর্যটক ও দর্শনার্থী।
মাঘের শুরু থেকেই বাগানের কিছু কিছু গাছে কলির মধ্যে সবুজের আবৃত্ত ভেদ করে রক্তিম লাল শিমুল ফুল ফুটতে শুরু করে। এখন সারি সারি গাছ থেকে ছড়াচ্ছে রক্তিম আভা। যেন জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা।
শখের বশে শিমুলবাগানটি গড়েছিলেন বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। ২০০২ সালে উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামের যাদুকাটা নদীসংলগ্ন ৯৮ বিঘা অনাবাদি জমি কেনেন তিনি। তখন সেটি ছিল বালুময়। ওই জমিতে তিন হাজার শিমুলের চারা রোপণ করা হয়। বাগানের মালিক প্রয়াত হয়েছেন। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন এখনো বিরাজমান।
সময়ের ব্যবধানে শিমুল চারা এখন ডালপালা পুষ্পপল্লবে এক অতুলনীয় দৃষ্টিনন্দন বাগানে পরিণত হয়েছে। এই শিমুলবাগানটি দেখতে ভিড় করছে হাজারো পর্যটক। শিমুলবাগানের প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ তারা। শুধু তা-ই নয়, বাগানে বিভিন্ন ছবি, নাটক ও গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং হচ্ছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থাসহ বাগানের আশপাশে কোনো প্রকার বিশ্রাম বা স্যানিটেশনের ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হয় পর্যটকদের।
চট্টগ্রাম থেকে সপরিবারে আসা পর্যটক তাছলিমা আক্তার জানান, যাতায়াতব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় আসতে কষ্ট হয়েছে। তবে সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে শিমুলবাগানের সৌন্দর্য দেখে।
একই পরিবারের সদস্য হুসনা বেগম বলেন, এত সুন্দর একটা জায়গা। বারবার আসতে চাইলেও অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হবে।
বাগান রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা জয়নাল আবেদীনের মেয়ে সেলিনা আবেদীন জানালেন বাগান নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা। তাঁদের পরিবারের নিজস্ব অর্থায়নে পর্যটকদের সুবিধার জন্য কাজ করছেন বলে জানান তিনি।