পাবনার চক ছাতিয়ানী মোল্লাপাড়া মহল্লায় তিন বন্ধুর মৃত্যু বিষাক্ত মদপানে নয়, ককটেল (এক ধরনের মিশ্রিত নেশা) পানে হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তে ও হাসপাতালে ভর্তি অসুস্থ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন—ছাতিয়ানি মহল্লার রবিউল ইসলাম রুমন (৩৫), জনি হোসেন (৩০) ও রুবেল হোসেন (৩২)। অসুস্থঅপর দুই বন্ধু সবুজ হোসেন ও শহিদুল ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, অতিরিক্ত মদপানে তিন বন্ধুর মৃত্যু ও দুজন গুরুতর অসুস্থ হওয়ার খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কর্মকর্তারা। পাবনা জেনারেল হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি থাকা শহিদুল ইসলামের জবানবন্দি নেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর পাবনা সদর সার্কেলের পরিদর্শক মো. শাহজালাল খান।
শহিদুলের জবানবন্দির বরাত দিয়ে সার্কেলের পরিদর্শক গতকাল বুধবার সকালে বলেন, তাঁরা মদ পান করেননি। রুমনের সঙ্গে শহরের বড় বাজার যান তিনি। তাঁকে মোড়ে দাঁড় করিয়ে রেখে ভেতর থেকে একটি পলিথিনে স্পিরিট আনেন রুমন। এরপর তাঁরা পাঁচজন ঘুমের বড়ি, কোক ও যৌন উত্তেজক ওষুধ পানির সঙ্গে মিশিয়ে ককটেল (এক ধরনের মিশ্রিত নেশা) বানিয়ে খান। পরে বিরিয়ানি ও চিপস খাওয়ায় গ্যাসের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
রাজশাহী বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী পরিচালক রওনক আক্তার মিতু বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা সবুজ হোসেনকে জিজ্ঞেসাবাদে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে রুমন, জনি ও রুবেলের মৃত্যুর কথা শুনে কেঁদে ফেলেন শহিদুল ও সবুজ। জবানবন্দিতে তাঁরা বলেন, ‘কেউ যেন এমনভাবে ককটেল বানিয়ে না খায়। খুব কষ্ট পেয়েছি, মৃত্যুর যন্ত্রণা যে কী তা খুব কাছ থেকে দেখেছি।’
সার্কেলের পরিদর্শক মো. শাহজালাল খান বলেন, তিন বন্ধুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়। যেখানে অসুস্থদের জবানবন্দি থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জবানবন্দিসহ তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৫ ডিসেম্বর ভোরে পাঁচ বন্ধু মাদক সেবন করেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন মারা যান। বাকি দুই বন্ধু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।