Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

একবেলা খিচুড়ি খেয়ে দিন কাটছে তাপসদের

তাহিরপুর ও ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ)

একবেলা খিচুড়ি খেয়ে দিন কাটছে তাপসদের

‘গরু-বাছুর দুইডা ভাইস্বা গেছে বানের জলে। পুলাপান নিয়া চাইর দিন ধইরা আছি আশ্রয়কেন্দ্রে। কামাই রুজি নাই, তাই দিনে একবেলা খিচুড়ি খাইয়া বাচ্চা-কাচ্চা লইয়া আছি। আর কয়দিন এইরম পানিবন্দী, আর না খাইয়া থাকন লাগব জানি না।’

তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর উচ্চবিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা তাপস তালুকদার কথাগুলো বলছিলেন। টাঙ্গুয়ার হাওর-তীরবর্তী ভবানীপুর গ্রামের তাপস তালুকদারের বাড়ি বন্যায় তলিয়ে গেলে সপরিবারে ওঠেন এ আশ্রয়কেন্দ্রে। তাঁর মতো আশ্রয়কেন্দ্রটিতে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অনেকে রয়েছেন খাদ্যসংকটে। একবেলা খেয়ে দিন পার করছেন তাঁরা।

আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ষাটোর্ধ্ব হালিমা খাতুন বলেন, ‘মাঝেমধ্যে ইউএনও স্যার আর চেয়ারম্যান আইসা রান্না করা খিচুড়ি দিয়া যায়। এই খিচুড়ি খেয়েই আমরা সবাই দিন পার করছি। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছি বাচ্চা-কাচ্চা লইয়া। চাইরদিকেই পানি আমরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকি।’

দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলী আহমদ মুরাদ বলেন, ‘হাওরপাড়ের গ্রামগুলোতে নৌকায় গিয়ে পানিবন্দী লোকজনকে উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। তাঁদের রান্না করা খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে প্রতিদিন।’

ইউএনও মো. রায়হান কবির বলেন, ‘উপজেলার সবগুলো আশ্রয়কেন্দ্রে আমাদের পাঁচটি দল সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। সেই সঙ্গে হাওরপাড়ের পানিবন্দী পরিবারকে উদ্ধার ও বন্যার্তদের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।’

এদিকে ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার নিজ বাড়িতেই আটকে পড়েছেন। তাঁরা খাটের ওপর বা বাঁশের মাচায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে যেসব পরিবার রয়েছে, তাদের ত্রাণসহায়তা মিললেও কষ্টে রয়েছেন বাড়িতে অবস্থান করা মানুষ।

ভানভাসি মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার থেকে তাঁরা পানিবন্দী। ফলে খাবার, বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বানের পানিতে সড়ক ডুবে যাওয়ায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তাঁরা। কেউ কারও খোঁজখবর নিতে পারছে না। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে তা অপ্রতুল।

উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয় সূত্রমতে, দুই উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৭ হাজার ৯০০টির ৪৯ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যার্তদের সুরক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৬০টি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। সরকারিভাবে ৬০০ বস্তা শুকনো খাবার ও ২ লাখ টাকা নগদ দেওয়া হয়েছে।

মধ্যনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের ফারকনগর গ্রামের বাসিন্দা জুয়েল মিয়া বলেন, ‘বন্যায় বাড়িতে পানি উঠেছে, ঘর ভেঙে গেছে। গ্রামের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি, এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ত্রাণসহায়তা পাইনি। অনাহারে দিন কাটছে।’

রেংচিপাড়া গ্রামের লোকেন ম্রং বলেন, ‘বাড়িঘর ডুবে আছে। আশ্রয় পাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত ত্রাণ পাইনি, কেউ আমাদের খোঁজ নিচ্ছে না।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রজেশ চন্দ্র দাস বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা করতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। বৃষ্টির পানি কমতে শুরু করেছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরছেন। আশ্রয়কেন্দ্রর পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি ত্রাণসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আমরা ত্রাণসহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ