যশোরের চৌগাছায় গরু গোসল করাতে পুকুরে নেমে নিখোঁজ প্রহল্লাদ ঘোষের (৬০) লাশ সাড়ে একুশ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ছোটকাকুড়িয়া গ্রামের আলাউদ্দিন মাস্টারের পুকুর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়। তিনি উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের দিঘড়ী যুগলপাড়ার বাসিন্দা।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়েও লাশ উদ্ধার না হওয়ায় শনিবার সকালে আবারও অভিযান শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে বোরোর খেত তৈরির কাজ শেষে হালের গরু দুটি গোসল করাতে ওই পুকুরে নামেন প্রহল্লাদ ঘোষ। দুপুরে গরু দুটি বাড়িতে পৌঁছালেও প্রহল্লদ আর বাড়িতে ফেরেননি।
দুপুর গড়িয়ে বিকেলেও তিনি বাড়িতে না ফেরায় তাঁকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন পরিবারের লোকজন। এ সময় গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, তাঁকে হাল চাষ শেষে গরু গোসল করাতে পুকুরে নামতে দেখেছেন। পরে গ্রামের ১৮ / ২০ যুবক ওই পুকুরে নেমেও তাঁর লাশ না পেয়ে চৌগাছা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেন।
সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুকুরের গভীরতা দেখে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে সংবাদ দেন।
খুলনা থেকে ডুবুরি দলের সদস্যরা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ১০টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালান। লাশ উদ্ধার না হওয়ায় রাত দশটায় উদ্ধার কাজ স্থগিত রেখে শনিবার সকাল নয়টার দিকে আবারও উদ্ধার কাজ শুরু করেন ডুবুরি দলের সদস্যরা।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নূরুল কদরের উপস্থিতিতে পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে ফায়ার সার্ভিস।
বেলা ১১টার দিকে নিহতের বাড়িতে যান চৌগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চুর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা।
স্থানীয়রা আরও জানান, গরু গোসল করাতে নেওয়ার আগে ভোর থেকে প্রহল্লাদ প্রায় বোরোর খেত তৈরির ১০ বিঘা জমিতে মই দেন।
স্থানীয়দের ধারণা গরু গোসল করানোর কোনো সময়ে কোনোভাবে তিনি পড়ে গিয়ে ডুবে যান। উদ্ধারের সময় গরু নিয়ন্ত্রণ করার লাঠি (পেচনি) তাঁর হাতে ধরা ছিল।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের আপত্তি না থাকায় তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশের সৎকারের অনুমতি দেওয়া হয়।’