Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

পরিশ্রম বেশি, মজুরি কম

পরিশ্রম বেশি, মজুরি কম

ফাল্গুনের সকালের মিষ্টি রোদ তখন আর নেই। কেবল ঝাঁজালো প্রখরতা ছড়াতে শুরু করেছে সূর্য। গতকাল সোমবার ঝিকরগাছার বল্লা মাঠে একদল নারী শ্রমিককে খেতে কাজ করতে দেখা যায়। দলে আট নারী ও দুজন পুরুষ রয়েছেন। তাঁরা খেতের গ্লাডিউলাস ফুলের মুতা (মূল) ওঠাচ্ছেন।

তাঁদের এ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতেই গোলজান বিবি (৬০) নামে এক নারী শ্রমিক বলে উঠলেন, ‘ছবি তুলে কী করবেন? ছবি তুললে কি আমাদের মজুরি বাড়বে, নাকি মাঠে আর কাজ করা লাগবে না। সরকার কি আর আমাদের সহযোগিতা করবে। নারীরা মাঠে কাজ করলে কি সমস্যা?’ এর পর আস্তে আস্তে আরও কী যেন বলছিলেন, তা আর শোনা গেল না।

আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও নারী-পুরুষের বৈষম্য কতটা দূর হলো তা জানতে বল্লা মাঠে যাওয়া। কিন্তু সেই হতাশা ও আক্ষেপের কথা শোনা গেল নারী শ্রমিকদের মুখে।

জানা গেল, একসঙ্গে কাজ করা আটজন নারীই সীমাহীন দরিদ্র ও অসহায়। গোলজান বিবি ২২ বছর ধরে কৃষিতে নারী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। স্বামী মারা গেছেন অনেক আগে। তখন থেকেই অন্যের কাজ করে সংসার চলে তাঁর। থাকেন পরের জায়গায়।

এসব নারী শ্রমিকের কৃষিকাজে খুবই পারদর্শী। সকাল ৬টা থেকে টানা দুপুর ১টা পর্যন্ত খেত-খামারে কাজ করেন। মজুরি হিসেবে পান মাত্র ২০০ টাকা করে। অথচ পুরুষ শ্রমিকেরা সকাল ৭টায় কাজ শুরু করলেও তাঁরা মজুরি পান ৩০০ টাকা।

সত্তর বছরের বিধবা রাবিয়া খাতুন বলেন, ‘মহাজনেরা পুরুষদের চেয়ে আমাদের বেশি খাটায়, অথচ মজুরি দেয় কম।’

ওই ৮ নারী শ্রমিকের সবাই ঝিকরগাছার কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা। যাদের মধ্যে মশিয়ার রহমানের স্ত্রী জোহরা খাতুন, আব্দুল খালেকের স্ত্রী কোহিনূর খাতুন, সুজাত আলীর স্ত্রী ফুলঝুরি খাতুন, মৃত জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী কোহিনূর খাতুন, শাহাদত হোসেনের স্ত্রী আমেনা খাতুন, পঙ্গু আকিজ উদ্দীনের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন।

তাঁরা বলেন, ‘আমাদের কথা একটু পত্রিকায় লেখেন। সরকার যেন আমাদের টাকা বাড়িয়ে দেয়। আর আমাদের একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেয়।’

তাঁদের সঙ্গে কাজ করা পুরুষ শ্রমিক কানাইরালী গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পুরুষ শ্রমিক ৩০০ টাকা করে পাই। আর নারীরা পান ২০০ টাকা করে।’

আলুচাষি নূর বিল্লাহ লাভলু বলেন, ‘পুরুষ শ্রমিককে তিন শ আর নারী শ্রমিককে দু শ টাকা দিতে হয়। সব সময় পুরুষ শ্রমিকের মজুরি একটু বেশি থাকে।’

বিশেষ করে ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালী ও পানিসারা এলাকায়ও পুরুষের চেয়ে নারী শ্রমিকের সংখ্যা অনেক বেশি। তবে সেখানেও নারী শ্রমিক মজুরি বৈষম্যের স্বীকার।

ঝিকরগাছা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লুবনা তাক্ষী বলেন, ‘নারীরা এখনো অনেক ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। সব ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর না করলে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব না।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ