ইসলামের দৃষ্টিতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কবিরা গুনাহ। কোনো মুমিন মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে পারেন না। মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার পরিণাম দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়াবহ। আখিরাতের কঠিন শাস্তির পাশাপাশি দুনিয়ায়ও তার জন্য বরাদ্দ থাকবে লাঞ্ছনার জীবন। কোরআন-হাদিসে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার পরিণতির কথা বর্ণিত হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রকৃত বান্দাদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বলেছেন, ‘যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না…।’ (সুরা ফুরকান: ৭২) একইভাবে সাক্ষ্য গোপন করাও ইসলামে বড় গুনাহ। এটিও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার মতোই বড় অপরাধ। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া এবং সাক্ষ্য গোপন করা সবচেয়ে বড় গুনাহ।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া হাদিসে বর্ণিত কবিরা গুনাহসমূহের অন্যতম। হাদিসে মহানবী (সা.) কবিরা গুনাহের তালিকায় চার নম্বরে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার কথা বলেছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘কবিরা গুনাহ হলো—আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, মা-বাবার অবাধ্য হওয়া, মানুষ হত্যা করা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া…।’ (বুখারি ও মুসলিম)
অন্য হাদিসে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়াকে শিরকের সমান অপরাধ বলা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্ত করার সমান।…’ (শুআবুল ইমান)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর আরেক হাদিসে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়াকে কিয়ামতের আলামত আখ্যা দেওয়া হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের আগে ব্যক্তি বিশেষকে সালাম দেওয়ার প্রচলন ঘটবে…, রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে, মিথ্যা সাক্ষ্যের প্রচলন ঘটবে এবং সত্য সাক্ষ্য গোপন করা হবে…।’ (মুসনাদে আহমদ)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক