Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

তীব্র শীতে বিপাকে শ্রমিকেরা

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা

তীব্র শীতে বিপাকে শ্রমিকেরা

‘রাতির বেলা এত ঠান্ডা যে ঘুমাতে পারি নে। কুয়াশায় টিন চুঁইয়ে টপটপ করে পানি পড়ে বিছানায়। ঘরের মধ্যি পানি জমে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা। লেপে কুলাচ্ছে না। কম্বলে গা গরম হয় না। তয় আমরা কিরাম করি টিয়ে থাকবানে!’

শীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা এভাবেই ব্যক্ত করছিলেন ভ্যানচালক জহির উদ্দিন। ষাটোর্ধ্ব এই মানুষটির বাড়ি মাগুরা পৌর এলাকার ভিটাসইর গ্রামে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঠান্ডায় মানুষ বাড়ি থেকেও বের হচ্ছেন কম, তাই ভাড়া হচ্ছে না। আইজ বোধয় বাড়ি ফিরতে হবে শুধু চাল কিনেই।’

শুধু জহির একাই নন। তাঁর মতন মাগুরার আরও অনেক শ্রমজীবি মানুষেরাও এই শীতে পড়েছেন বিপাকে। তাঁরাও তাঁদের শীতের অভিজ্ঞতা জানান জহিরের মতো করেই।

এদিকে মাগুরায় এক সপ্তাহ ধরে পড়েছে কনকনে শীত। কুয়াশার সঙ্গে বইছে ঠান্ডা বাতাস। গতকাল শনিবারও রোদ দেখা মেলেনি। ফলে বিপাকে পড়েছেন দিন এনে দিন খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষেরা।

রিকশাচালক বাহার মিয়া বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে আয় কমেছে অর্ধেক। মালিককে রিকশা ভাড়া ২০০ টাকা দিয়ে নিজের খরচের টাকা তেমন থাকছে না। শীত এতটাই পড়েছে যে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। যারা বের হচ্ছেন তাঁরাও আবার ঠান্ডা বাতাসের জন্য রিকশাতে তেমন উঠতে চাইছেন না। এখন পরিবার নিয়ে এই এক সপ্তাহ খুব টানাটানির মধ্যে আছি।’

মাগুরা জেলার পুরোনো গরম কাপড় ব্যবসায়ী সমিতিরা নেতা পটল মিয়া বলেন, ‘এ বছর শুরুর দিকে শীত তেমন পড়েনি। ফলে পুরোনো কাপড়ের যে চালান আমরা চট্টগ্রাম থেকে এনেছিলাম তা ডিসেম্বরেও বিক্রি হচ্ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তখন আমাদের প্রায় ৩০ জন ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। তবে জানুয়ারির এই শেষের দিকে বেশ শীত পড়েছে। এতে কিছুটা বেচা-বিক্রি চলছে। তবুও আশানুরূপ নয়। কারণ কদিন পরেই গরম পড়বে। তাই মানুষ হাতমোজা, পায়ের মোজা ও মাফলার ছাড়া অন্য কোনো শীতবস্ত্র কিনতে আগ্রহী না।’

মাগুরা ভায়না এলাকার সদর হাসপাতালে রোগী দেখতে এসেছেন রেহানা খাতুন। সঙ্গে তাঁর রয়েছে মেয়েও। কম্বল জড়িয়ে ভ্যানে করে এসেছেন সেই রাঘবদাউড় গ্রাম থেকে। তিনি বলেন, ‘আমার আত্মীয় দেখতি হাসপাতালে আলাম। ভাবছিলাম শহরে শীত কম হবি। কিন্তু এখানেও খুব শীতের প্রকোপ। অনেকেই হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। যাগের বেশি সমস্যা তাঁরা রইছে। এই রোগী দেখতি আসার সময় ভ্যানে করে গায়ের কম্বল নিয়ে আইছি। এহন মেয়েরে নিয়ে বাড়ি ফিরে যাব।’

করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সন্তানকে নিয়ে স্কুলে নতুন বই আনতে গিয়েছিলেন গোলাম হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনার জন্য যে স্কুল বন্ধ করে দেছে তা আমার ভালো লাগছে। প্রচণ্ড শীতে বড়রাই টিকতে পারছে না। তার মধ্যে এই শীতে সকাল আটটায় উঠে বাচ্চারা স্কুলে গেলে অসুস্থ হয়ে যেত।’

নতুন বাজার এলাকার সেতুর ওপরে চানাচুর বিক্রেতা তাপস বলেন, ‘শীত কারও জন্য ভালো আবার আমার মতো দরিদ্র মানুষের জন্য খুব খারাপ। কেউ চানাচুর কিনছে না। ঠান্ডায় ভাজাপোড়া খালি নাকি পেটে সমস্যা হবে এই বলে চলে যাচ্ছে। কন তো, শীত কি আমার হাতের জিনিস!’

এদিকে মাগুরা জেলার সর্বত্র গত সাতদিন ধরে তীব্র শীত পড়ায় বিভিন্ন জায়গাতে ব্যক্তি উদ্যোগে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগেও এসব কম্বল বিতরণ চলছে

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ