বরিশালের আগৈলঝাড়ায় নির্মাণের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও একটি সেতুর সংস্কার হয়নি। জরাজীর্ণ সেতুটি প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে শত শত মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের আহুতিবাটরা গ্রামের হালদার বাড়িসংলগ্ন খালের ওপর ১৩ বছর আগে এ সেতু নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পাঁচ-ছয় বছর পর থেকেই সেতুর নিচের লোহার বিমে মরিচা ধরে খুলে পড়ে। এটি নির্মাণও করা হয়েছিল অপরিকল্পিতভাবে।
বাশাইল-আহুতিবাটরা সড়কের পাশে এ সেতুর গোড়ায় মাটি না দেওয়ায় শুরু থেকেই যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। তাই শুধু হেঁটে লোকজন আসা-যাওয়া করত। তারপর সেতুর বড় একটি অংশ মরিচায় ধরে ধসে পড়ে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো মুহূর্তে এটি ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু বিকল্প কোনো যাতায়াত পথ না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
সরেজমিন দেখা যায়, সেতুটি মূল সড়ক থেকে তিন ফুট উঁচু। তাই এ রাস্তা দিয়ে কোনো মোটরসাইকেল, ইজিবাইক ও ভ্যান চলাচল করতে পারে না। প্রতিদিনই সেতুটি পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার পড়ছে কেউ না-কেউ। আহুতিবাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থী ও উপজেলা সদরে চলাচলের একমাত্র সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া জমি থেকে ধান আনার জন্য গাড়ি চলাচল করতে না পারায় কৃষকেরা ভাঙা সেতু দিয়ে পার হচ্ছেন।
আহুতিবাটরা গ্রামের বাসিন্দা মঙ্গল চন্দ্র হালদার বলেন, ‘প্রায় ১৩ বছর আগে নির্মিত এ সেতুটির নিচের লোহার তৈরি বিম মরিচা পড়ে ধসে পড়ায় আমাদের অনেক দুর্ভোগ হয়। সেতুটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি।’
আহুতিবাটরা গ্রামের গোপাল হালদার বলেন, ‘আমাদের হালদার বাড়ির ২৫টি পরিবারের কয়েক শ মানুষ এ সেতু দিয়ে চলাচল করে। এ এলাকার কেউ অসুস্থ হলে তাকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থাটি পর্যন্ত নেই। অথচ সেতুটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো মাথাব্যথা নেই। কয়েক বছর ধরে শুনেছি, সেতুটি মেরামত করা হবে, কিন্তু কবে হবে তা কেউই বলতে পারে না।’
তপন হালদার, রসরাজ হালদার, প্রবীণ হালদারসহ কয়েকজন বলেন, ‘আমাদের গ্রামে বাৎসরিক সর্বজনীন দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেতুটি এমনভাবে বানানো হয়েছে, গাড়ি চলাচল করতে পারে না। তাই পূজার সময় আসা লোকজন এই সেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী শিপলু কর্মকার জানান, গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি বেহাল। সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।