খাবার ও আর্থিক সংকটের কারণে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পাবনা মানসিক হাসপাতালে রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে রোগীদের ভর্তি নেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শাফকাত ওয়াহিদকে পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) পদে পদায়ন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। একই দিনে এই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঠিকাদারের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
গতকাল সকাল থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ফ্রি বেডে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রতন কুমার রায়। এর আগে রোববার তিনি এক অফিস আদেশে রোগী ভর্তি বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
রোববারের আদেশে বলা হয়েছিল, আদালত হাসপাতালের টেন্ডার কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করায় এর কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভর্তি রোগীদের ওষুধ ও খাবার সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় রোগীদের ওষুধ ও খাবার সরবরাহ চলমান রাখা সম্ভব হয়নি। পুনরাদেশ
না দেওয়া পর্যন্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বহির্বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক এ কে এম শফিউল আযম বলেন, পরিচালকের নির্দেশে ভর্তির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। আরেক আদেশ পেয়ে ভর্তি কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে এখন আনুমানিক ৪৮০ জন রোগী ভর্তি আছেন। রতন কুমার রায় বলেন, গত রোববার রোগী ভর্তি বন্ধ করার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জটিলতা নিরসনের আশ্বাস দিয়েছে। ফলে গতকাল থেকে আবারও রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।
২০২১ সালের ১৪ জুন পাবনা মানসিক হাসপাতালের রোগীদের খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রোজ এন্টারপ্রাইজ টেন্ডারে দ্রব্যের নাম উল্লেখ করার জটিলতা নিয়ে পাবনা জজকোর্টে একটি মামলা করে। একই বছরের ২৯ জুন আদালত সার্বিক বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিবাদীর বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করলে শুরু হয় জটিলতা। এমন পরিস্থিতিতে ওই বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ঠিকাদার নিয়োগ এক বছরের জন্য বাড়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু গত জুলাই মাস থেকে খাদ্য সরবরাহে ঠিকাদার না থাকায় একটি কমিটির মাধ্যমে দোকান থেকে বাকিতে খাবার কিনে রোগীদের সরবরাহ করা হয়। এভাবে খাদ্য সরবরাহ করতে গিয়ে ২ মাস ১০ দিনে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। এই টাকা পরিশোধ কীভাবে করা হবে, এ চিন্তাই এখন মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রতন কুমার রায়।