নড়াইলের কালিয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার বাদীর স্ত্রী ও বোনকে মারপিটসহ রান্নার চুলা ও আসবাব ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের পিটুনিতে মারাত্মক আহত নারগিস বেগম (৪৫) ও রেশমা বেগম (৫০) নিজ বাড়িতে স্থানীয় ডাক্তারের চিকিৎসা নিচ্ছেন ।
উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের মো. সবুজ মৃধা অভিযোগ করে বলেছেন, বর্তমান ইউপি সদস্য জামাল মোল্যা ও সাবেক ইউপি সদস্য শরিফুল মোল্যা গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছিল ।
ত ২০০৬ সালে জামাল মোল্যা গ্রুপের সমর্থক ও সবুজ মৃধার মামা মোকাদ্দেস মোল্যা প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হন। মামার খুনের ঘটনায় সবুজ মৃধা বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে গত বুধবার দুপুরে ও বৃহস্পতিবার রাতে উভয় গ্রুপের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
হস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ৭-৮ জনের একদল পুলিশ সবুজ মৃধার বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রী নারগিস বেগমের কাছে তাঁর সন্ধান জানতে চান। কিন্তু নারগিস সবুজের সন্ধান দিতে না পারায় পুলিশ দলের সদস্যরা নারগিসকে হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন। ওই সময় সবুজের বোন রেশমা বেগম ঠেকানোর চেষ্টা করলে তাঁকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।
ছাড়া বাড়ির রান্নার চুলা ও চেয়ারসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার রাতে ১২টার দিকে নারগিস গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য তাঁকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে পুলিশ পুরুলিয়ার মোড় নামক স্থানে বাঁধা দেয়।
পরে স্থানীয় চাঁচুড়ি বাজারে নিয়ে এক গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। নারগিসের অবস্থার অবনতি হলে পরদিন শুক্রবার বিকেলে আবার নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ হাসপাতাল গেটে আবারও তাঁদের বাধা দেয় এবং নড়াইল শহরের মল্লিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে নামমাত্র চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
বিষয়ে কারও কাছে কিছু না বলার নির্দেশ দেয় তাঁদের। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোনো পুলিশ সদস্যের নাম তিনি জানাতে পারেননি।
নির্যাতনের শিকার নারগিস নিজ বাড়ির বিছানায় শুয়ে কাতর কণ্ঠে জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ৭- ৮ জন পুলিশ বাড়িতে এসে আমার স্বামী খোঁজ জানতে চান। তাঁদের আমি জানি না বলার সঙ্গে ২-৩ জন পুলিশ তাঁকে ও তার ননদকে বেদম মারপিট করেন।
লাসহ মালামাল ভাঙচুর করে চলে যান। পুলিশ বাঁধা দেওয়ায় চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। পুলিশের হুমকির মুখে তাঁরা চিকিৎসা নিতে পারছেন না এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেও সাহস পাচ্ছেন না। তাই সবকিছু নীরবেই মেনে নিতে হচ্ছে তাঁদের।
উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনি বলেছেন, চাদপুর গ্রামের হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা তিনি জানেন। তবে পুলিশি নির্যাতনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম জানান, ঘটনার রাতে তিনি চাঁদপুর গ্রামে পুলিশ টহলের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু ওই দুই নারীকে মারপিটের বিষয়টির কোনো সত্যতা তিনি পাননি। তা ছাড়া বিষয়টিতে কেউ অভিযোগও করেননি। তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নেওয়ার জন্য এ ধরনের কথা বলছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।