‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কী রে হায়। ও সেই চোখে দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়...’। গতকাল শনিবার দিনভর সেই পুরোনো দিনেরই স্মৃতিচারণা করলেন সুরেলা গানে গানে মাগুরা দুধমল্লিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গী এলাকায় অবস্থিত বিদ্যালয়টির ৫০ বছর পূর্তি এবং বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনীতে পুরো ক্যাম্পাস সেজেছিল লাল-নীল বর্ণিল সাজে।
সকাল ৯টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে ছাত্রীরা ঢাকা রোড হয়ে মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামের মূল অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে শেষ হয়। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭২ থেকে ২০২২ সালের প্রাক্তন ছাত্রীরা একত্র হয়ে হারিয়ে যান সেই পুরোনো দিনে। নানান বয়সের প্রাক্তনদের আবেগ যেন একটু বেশিই ছিল। অনেক দিন পর দেখা হওয়ায় ছিল নানা রকম খুনসুটি।
১৯৯১ সালের ছাত্রী লিলি ইসলাম বলেন, ‘একজন ছাত্রী দিয়ে শুরু হয় এই স্কুলের যাত্রা। আমরা যখন পড়েছি তখনো ছাত্রীসংখ্যা তেমন ছিল না। বিদ্যালয়টি শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় ভবন ছাড়া অতিরিক্ত জায়গাও আমাদের ছিল না। তাই আমরা এ-ভবন, ও-ভবন ঘুরেফিরে বেড়াতাম। সেসব দিন এখন ভাবলে নস্টালজিয়ায় পড়তে হয়।’
অন্য এক প্রাক্তন ছাত্রী আন্জুমনারা সাথি জানান, আমি ১৯৮৪ সালের ব্যাচ। এই স্কুল মেয়েদের বলে আমাদের ভেতরেও ছিল গ্রুপিং। নানা খুনসুটি আর হাতাহাতি করেছি না বুঝে। এসব এখন মনে পড়ছে। অনেকের কথা স্মৃতিতে ভাসছে। ৩৫ বছর পর স্কুলে এসে সব মনে পড়ে যাচ্ছে আর চোখ ভিজে যাচ্ছে।
বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রীদের আবেগ-স্মৃতিচারণা-আড্ডা ছুঁয়ে যায় পুনর্মিলনী প্রাঙ্গণ। দীর্ঘদিনের পুরোনো বান্ধবী, সতীর্থ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পেয়ে প্রাণ জুড়িয়েই সারা দিন কেটে যায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের। সকাল ৯টায় স্কুলপ্রাঙ্গণ থেকে বের করা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। সকাল ১০টায় ইনডোর স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসানসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।