সাড়ে ১০ হাজার বই। থরে-থরে সাজানো, গোছানো। টাইলস দিয়ে গড়া মেঝে ফকফকে, পরিচ্ছন্ন। শান্ত, সুনিবিড় চমৎকার পরিবেশ। তবে যাদের জন্য এতসব আয়োজন, সেই পাঠকের কেউ আসেন না।
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের পঞ্চখণ্ড গোলাবিয়া পাবলিক লাইব্রেরির চিত্র এটি। ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারটিতে সব থাকলেও নেই পাঠক। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সিলেট বিভাগের তালিকা অনুযায়ী, নিবন্ধিত বেসরকারি গ্রন্থাগারের তালিকায় পঞ্চখণ্ড গোলাবিয়া পাবলিক লাইব্রেরির স্থান ১১ তম। ২০১২ সালে লাইব্রেরিটি নিবন্ধন পায়। এর সদস্য সংখ্যা মাত্র ১৩৫ জন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিনতলা বিশিষ্ট পাঠাগারে বিভিন্ন বিষয়ের বই রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রেফারেন্স, সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন, জীবনী গ্রন্থ রয়েছে। গ্রন্থাগারে বসে বই পড়ার পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ধার হিসেবে বাসায় নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে।
অথচ এই পাঠাগারে এখন বই পড়ার জন্য কেউ আসেন না। সর্বশেষ ২০০৬ সালে এই পাঠাগারে ১১ সদস্যবিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। তিন বছর পরপর কমিটি গঠনের নিয়ম থাকলেও নানা কারণে সেটি আর সম্ভব হয়নি। কবে নতুন কমিটি হবে, সে প্রশ্নের উত্তর নেই। পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি এবং বর্তমানে সাহেদ আহমদ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
পাঠাগারের কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসান বলেন, এখন জানার আগ্রহ কমে গেছে। নতুন প্রজন্ম সাহিত্য নয়, বিজ্ঞান ভালোবাসে। কিন্তু তারা জানে না, সাহিত্যই বিজ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করে।
লাইব্রেরিয়ান সুজন চন্দ্র দাস বলেন, ২০২১ সালে মাত্র ৩৩৫টি বই পড়ার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সবগুলো বই ফেরত দিয়েছেন পড়ুয়ারা। কোন বয়সের পাঠক বই নিতে আগ্রহী জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশির ভাগ চাকরিজীবী ও শিক্ষক।