একদিকে চলছে ভোট চেয়ে মিছিল ও খাবার আয়োজন। অন্যদিকে চলছে মৃত সদস্য প্রার্থীর দাফনের প্রস্তুতি। এমন ঘটনা ঘটেছে ত্রিশাল উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হদ্দেরভিটা গ্রামে। টানা দুবারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য আব্দুস ছালাম (৭০) এবারও প্রার্থী হয়েছিলেন ফুটবল প্রতীক নিয়ে। আগামী ২৮ নভেম্বরের নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন তিনি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার সকালে সহস্রাধিক মানুষ আব্দুস ছালামের পক্ষে মিছিল বের করেন। তবে শারীরিক অসুস্থতায় মিছিলে থাকতে পারেননি তিনি। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হচ্ছিল তাঁর বাড়িতেই। মিছিল যখন শেষ পর্যায়ে, সেই মুহূর্তে খবর আসে আব্দুস ছালাম মারা গেছেন। ফলে মুহূর্তেই নেমে আসে শোকের ছায়া।
প্রার্থীর পরিবারের সদস্যরা জানান, আব্দুস সালাম অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ছিলেন। তাঁর এক ছেলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। কিছুদিন আগে একটি অপারেশন করিয়েছেন তিনি। ডাক্তার বলেছিল, তাঁকে এক মাস বিশ্রামে থাকতে হবে। প্রতীক বের হওয়ার আগে এই শরীরেই নির্বাচনী সভায় বক্তব্যও দিয়েছেন। এ অবস্থায় আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে একটু সুস্থ হওয়ায় প্রতীক নিতে যান। আবারও অসুস্থ হলে প্রতিপক্ষ এলাকায় গুজব ছড়ায়। কিন্তু হাজারের ওপর মানুষের জন্য আয়োজন করা খাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই বণ্টন করা হয় বরে তারা জানান।
পার্শ্ববর্তী গ্রামের ভ্যানচালক কবীর মিয়া বলেন, ‘ইউপি সদস্য কোনো কার্ডে কখনো কারও কাছে টাকা-পয়সা নিতেন না। তিনি খুব সহজ-সরল মানুষ ছিলেন। শারীরিক অসুস্থতায় এবার তিনি নির্বাচন করতে চাননি। তবে এলাকাবাসীর অনুরোধে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।’
আব্দুস ছালাম হদ্দেরভিটা গ্রামের মৃত হাফেজ সামসুদ্দিনের ছেলে। দুবার ইউপি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মারা যান। পরে জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাঁকে।
এই ইউপি সদস্যের মৃত্যুর বিষয়ে উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক মিয়া বলেন, ‘ইউপি সদস্যের মৃত্যুতে নির্বাচন স্থগিত হবে না। ইউপি সদস্যসহ সব পদের নির্বাচন যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।’