রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে একটি বিদ্যালয়ের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হলাশের পরিচয় মিলেছে। হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকার সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে কাপ্তাই থানা-পুলিশ। একে ‘একটি পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড’ বলেছেন জেলা পুলিশ সুপার।
হাসিনা আক্তার সুমি উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের মৃত আব্দুর রশীদের মেয়ে। তাঁর স্বামী ইমাম উদ্দিন আলীকদমে বসবাস করেন, তিনি পেশায় হাতির মাহুত বলে জানা গেছে।
গত শনিবার বিকেলে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিএফআইডিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত শৌচাগার থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে নিহত সুমির মা আমেনা বেগম রোববার সকালে থানায় এসে মেয়ের পরিচয় নিশ্চিত করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘কয়েক দিন আগেও আমার মেয়েকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তার জামাই।’
হত্যার অভিযোগে সুমির মা বাদী হয়ে গতকাল কাপ্তাই থানায় মামলা করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার মরদেহ উদ্ধারে নেতৃত্ব দেন কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক শাহীনুর রহমান। সে সময় পুলিশ জানায়, পরিচয় না জানা ওই নারীর বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। তাঁর মুখ থেঁতলানো ও কালো ছিল।
হাসিনা আক্তারের মা আমেনা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে জামাই ইমাম উদ্দিনের তালাক হয়েছে তিন মাস আগে। তালাক হলেও তাঁদের মধ্যে টাকার লেনদেন ছিল। তিন মাস পর আবার তাঁদের মধ্যে ইসলামি রীতি অনুযায়ী বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাপ্তাইয়ের ঢাকাইয়া কলোনিতে বাস করা সুমির বান্ধবী আমার মেয়ের জামাইকে প্রেমে ফেলে বিয়ে করার চেষ্টা করে।’ এ জন্য তাঁর মেয়েকে হত্যা করে বলে অভিযোগ করেন।
কাপ্তাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে সুমিকে হত্যা করে মুখমণ্ডল জ্বালিয়ে দিয়ে বিদ্যালয়ের শৌচাগারে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তিনি প্রেমঘটিত কারণে হত্যার শিকার হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সন্দেহজনক দুজনকে আটক করা হয়েছে।’ তদন্ত ও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছছের হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহামুদা বেগম, কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশন আরা রবসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, ‘এটি একটি পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড। তাঁকে মেরে শৌচাগারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তাঁর শরীরের কিছু অংশ পোড়া রয়েছে, যাতে কোনো চিহ্ন বা আলামত না থাকে। আমরা সন্দেহজনক দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আরও একজন সন্দেহের তালিকায় আছে। হত্যাকারী যেই হোক না কেন শিগগিরই তাঁরা ধরা পড়বেই।’