এবার কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়াল চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। দ্বন্দ্বে জড়ানো দুই পক্ষই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, ৩০ ডিসেম্বর সদরঘাট থানা ও উত্তর হালিশহর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। এর দুদিন পর গত রোববার সেই কমিটিকে ‘প্যাকেজ’ কমিটি উল্লেখ করে পাল্টা কমিটি ঘোষণা করেন নগর ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতাদের একাংশ।
এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রাম শহরের ১৩ ইউনিটে কমিটি দেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তখন কয়েকটি ওয়ার্ড ও কলেজে পাল্টা কমিটি দেন আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা।
হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ শাখায় পাল্টা কমিটি দিয়ে বহিষ্কার হন নগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিথুন মল্লিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদ রাসেল। তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। এতে একই বলয়ের দুই পক্ষের নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, ৩০ ডিসেম্বর আকবর হোসেন রাজনকে আহ্বায়ক করে আগামী তিন মাসের জন্য ৭৮ সদস্যের সদরঘাট থানা আহ্বায়ক কমিটি এবং ফরহাদ উদ্দিন জিতুকে সভাপতি ও ফয়সাল বাদশাকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য ৩৩ সদস্যের এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
তবে গত রোববার চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের প্যাডে ইমরান খান আরজীকে সভাপতি ও হামিদুল হাসান সিফাতকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২৫ সদস্যের পাল্টা কমিটি ঘোষণা করেন সহসভাপতি থেকে উপসম্পাদক পর্যায়ের ১১ নেতা।
প্যাডে সই থাকা ১১ নেতার একজন হলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সামদানী জনি। তিনি বলেন, ‘ইমু-দস্তগীর নিজেদের পছন্দমতো কর্মীদের নিয়ে একের পর এক কমিটি দিচ্ছেন। নগর ছাত্রলীগের কমিটিতে যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে তাঁরা এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করেন না। জ্যেষ্ঠ নেতারা তাঁদের সমন্বয় করে কমিটি করতে বললেও তাঁরা সেটি মানেননি। এর প্রতিবাদ হিসেবে আমরা পাল্টা কমিটি দিয়েছি।’
তবে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘পাল্টা কমিটি হয় তখন, যখন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুটি কমিটি ঘোষণা করেন। এই (পাল্টা) কমিটিতে যাঁদের সই রয়েছে, তাঁদের অনেকেই বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করেন না। তাঁদের ইচ্ছে, সব ওয়ার্ডেই তাঁদের কর্মীরা কমিটিতে আসবেন। কিন্তু এমন হলে তো অন্য যাঁরা দীর্ঘদিন রাজনীতি করছেন, তাঁদের সঙ্গে অন্যায় হয়ে যায়।’
পাল্টা কমিটি ঘোষণা করা নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জাকারিয়া দস্তগীর।