নীলফামারীর ডিমলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে ১৪ মাস ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এতে থমকে আছে পরিষদের সেবাদান কাজকর্ম।
কার্যালয় সূত্র জানায়, তাদের কাছে ডিমলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৮৬ হাজার ৬৯১ টাকার বিল পাওনা রয়েছে। ১৬ মাসের এ বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
ইউপি কার্যালয় থেকে সেবা না পাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাঁরা বিদ্যুৎ না থাকার জন্য টানা চার মেয়াদে ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা আনোয়ারুল হক সরকারের উদাসীনতা ও অবহেলাকেই দায়ী করছেন।
সম্প্রতি ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পরিষদের সচিব ও ডিজিটাল তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা তাঁদের নির্ধারিত কক্ষে নেই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যুৎ না থাকায় ভারপ্রাপ্ত ইউপি সচিব আনিসুর রহমান পাশের ইউপি কার্যালয়ে বসে কাজ করেন।
সেবা নিতে আসা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘চার মাস ধরে ঘুরেও ছেলের একটি কম্পিউটারাইজড জন্মনিবন্ধন কার্ড নিতে পারিনি। কার্ড না থাকায় ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছি না। নানা অজুহাতে নিবন্ধন কার্ডের জন্য সরকারি ফি বাদেও অতিরিক্ত ৪০০ টাকা নিয়েছে তথ্যকেন্দ্রের উদ্যোক্তা।’
মোবাইল ফোনে কথা হলে আনিসুর জানান, আপাতত পূর্ব ছাতনাই ইউপি থেকে জরুরি কাজ করে দেওয়া হচ্ছে।
ডিজিটাল তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা আবু ছোয়াদ বলেন, ‘জোড়াতালি দিয়ে চলছে তথ্যকেন্দ্রের সেবা। সোলার প্যানেল দিয়ে যতটুকু সম্ভব কাজ করছি। তবে ক্যামেরা ও ফটোকপি সোলার দিয়ে চলে না।’
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও নুর ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ মানুষের খুব সমস্যা হচ্ছে। প্রতিদিন অনেক লোক সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এতে সাধারণ ভোটারদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে। সরকারি সুবিধাভোগীদের কার্ড পেতে ও অনলাইনে জন্মনিবন্ধন করতে ছুটতে হয় পাশের ইউনিয়ন ও উপজেলা সদরে। অধিকাংশ সময়ই পরিষদের তথ্যকেন্দ্র বন্ধ থাকে।
যোগাযোগ করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় (সোলার প্যানেল) ইউনিয়ন পরিষদের সব কার্যক্রম চলছে। আমার পরিষদে আপাতত বিদ্যুৎ সংযোগের দরকার নেই। যখন প্রয়োজন হবে তখন সংযোগ লাগিয়ে নেব।’
ডিমলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আব্দুল্লাহ আল কাফি জানান, পশ্চিম ছাতনাই ইউপি কার্যালয়ের কাছে ৮৬ হাজার ৬৯১ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। বকেয়া পরিশোধের জন্য একাধিকবার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও বিল পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।