চট্টগ্রাম নগরীর ১৬ কিলোমিটারের উড়ালসড়ক গত বছরের ১৪ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয়। এরপর কেটে গেছে তিন মাস। কিন্তু এখনো চালু করা যায়নি উড়ালসড়কটি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে আরও আড়াই মাস সময় লাগবে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান জানান, উড়ালসড়কে গাড়ি ওঠানামার জন্য ১৫টি
র্যাম্প নির্মাণ করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি র্যাম্পও নির্মাণ শেষ হয়নি। সম্প্রতি তিনটি র্যাম্পের কাজ শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উড়ালসড়কটি চালু হলে নগরীর যোগাযোগব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। কমবে যানজট। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ ও দুর্ভোগ কমে আসবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে এ উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ১৬ কিলোমিটারের সাড়ে ১৪ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি দেড় কিলোমিটারে শেষ পর্যায়ের গার্ডার বসানোর কাজ চলছে। এই অবস্থায় পুরোপুরি কাজ (র্যাম্প ছাড়া) সম্পন্ন করতে আগামী এপ্রিল মাস পর্যন্ত নগরবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে।
তথ্যমতে, গত ১৪ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উড়ালসড়কটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ওই দিন পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য যানবাহন চলাচল করেছিল সড়কের সাড়ে ১৪ কিলোমিটার অংশে। নির্মাণকাজ অসমাপ্ত থাকায় যান চলাচল এখন বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকায় নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। নগরীতে প্রতিনিয়ত লেগে থাকছে যানজট।
সিডিএ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, নগরীর পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটারের উড়ালসড়কটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন। সড়কটিতে গাড়ি ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম্প থাকছে। চার লেনের হবে এ সড়ক।
প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান জানান, চট্টগ্রাম নগরীর একেবারে বুক চিরে চলে যাওয়া প্রধান সড়ক হচ্ছে পতেঙ্গা থেকে কালুরঘাট। দুই লেনের সড়কটিতে দিনের অধিকাংশ সময় যানজট লেগে থাকে। দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড়, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ মোড়, ইপিজেড মোড়, বন্দরটিলাসহ আরও কয়েকটি পয়েন্টে যানজট হয় তীব্র। অনেক সময় যানজটে পড়ে বিমান মিস করার ঘটনাও ঘটে। দুর্ভোগে পড়তে হয় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। উল্লিখিত বিষয়গুলো মাথায় রেখেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।