ধনবাড়ীর সাত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আলোচনা-সমালোচনা, হামলা-মামলা ও ভাঙচুরসহ নানা ঘটনার মধ্যে দিয়েই আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভোট। চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসতে লড়ছেন ১৮ জন প্রার্থী। ইতিমধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীসহ কয়েজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছেন। নানা অপ্রীতিকর ঘটনায় এলাকাবাসীও ক্ষুব্ধ।
উপজেলার চার ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিন ইউপিতে এতে বিনা ভোটেই জয় পান নৌকা প্রতীকের তিন চেয়ারম্যান। এসব ইউপিতে চেয়ারম্যান পদের জন্য ভোট দিতে পারবেন না এসব ভোটার। জয়ীরা হলেন বলিভদ্রে মো. রফিকুল ইসলাম, মুশুদ্দিতে আবু কাউসার ও বীরতারাতে আহমেদ-আল ফরিদ।
ধোপাখালী, যদুনাথপুর, পাইস্কা ও বানিয়াজন—এ চার ইউপিতে হচ্ছে চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থন থাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। এ ছাড়া ইউপি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৮৫ জন ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৬৫।
ধোপাখালীতে নৌকা প্রতীকের বর্তমান চেয়ারম্যান আকবর হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী কালাম হোসেন তালুকদার মিন্টু। আকবরের দলীয় নেতা-কর্মীদের হামলায় কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টুর এক কর্মী আহতের ঘটনায় মামলা হওয়াতে গত মঙ্গলবার একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শেষ মুহূর্তে সব প্রার্থীই নিজ নিজ প্রচারে ব্যস্ত। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা বেশি থাকায় নৌকার বিজয়ে মাঠে আছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রচার চালাচ্ছেন নৌকার প্রার্থীরা। ভোটারেরা জানান, ধোপাখালী, বানিয়াজান ও যদুনাথপুর ইউপিতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
বলিভদ্র ইউপির ভোটার জামাল উদ্দিন, মুশুদ্দি ইউপির ভোটার শাহাদত হোসেন ও বীরতারা এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ বছর পর ভোট আসে। মনোনয়ন দাখিলের সময় এ তিন ইউনিয়নে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। দলীয় চাপে অন্য প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে চেয়ারম্যান পদে তিনজন জয় পেয়েছেন। তাই এ পদের ভোট দিতে পারলাম না। এ নিয়ে খুবই খারাপ লাগছে।’
যদুনাথপুরের ভোটার বিউটি আক্তার বলেন, ‘নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। কে চেয়ারম্যান হবে এটা নিয়ে ভাবি না। নিজের কাজ নিজের করে খেতে হয়।’
ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চান মিয়া বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পুলিশ প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা করুণা সিন্দু চাকলাদার বলেন, ‘আশা করছি সবার সহযোগিতায় জনগণকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারব। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেওয়া হবে না। সবসময় মাঠে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম কাজ করবে। ভোটারেরা উৎসাহ নিয়েই ভোট দিতে আসতে পারবে।’