চারঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) উপনির্বাচনে প্রচারণায় নেমে পড়েছেন চার চেয়ারম্যান প্রার্থী। গত শুক্রবার প্রতীক পাওয়ার পর প্রচারণায় নামেন তাঁরা।
প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনাও শুরু করেছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিউর রহমান মতির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক।
চতুর্থ ধাপে গত ২৬ ডিসেম্বর চারঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলুল হক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি গত ৯ ফেব্রুয়ারি শপথের মাধ্যমে দায়িত্ব নেন। গত ৬ মার্চ তিনি মারা যান। এরপর আগামী ১৫ জুন ওই ইউনিয়নের উপনির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, চারঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকা প্রতীকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, আনারস প্রতীকে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব ও সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, ঘোড়া প্রতীকে বিএনপি সমর্থক জিল্লুর রহমান মিটুল ও মোটরসাইকেল প্রতীকে আওয়ামী লীগ সমর্থক তোতা মিয়া মাঠে রয়েছেন।
এদিকে, গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলুল হক বিপুল ভোটে জয়লাভ করলেও এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মতিউর রহমানকে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলছেন, তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও মতিউর রহমানের মূল লড়াইটা হবে বিএনপি নেতা মোজাম্মেল হকের সঙ্গে।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কঠিন পরীক্ষার জন্য নিজেদের দলীয় কোন্দলকেই দায়ী করেছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। তা ছাড়া ফজলুল হক মারা যাওয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন তাঁর ছেলে ফয়সাল হক মনোনয়ন পাবেন। সে হিসাব করে প্রচার চালাতে আগে থেকেই মাঠে নেমেছিলেন কয়েকজন নেতা। কিন্তু দলের ত্যাগী নেতা হিসেবে মতিউর রহমান মনোনয়ন পেলেও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কয়েকটা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আছে। এখনো কেউ নৌকার প্রার্থীর পক্ষে জোরেশোরে মাঠে নামেননি। এ ছাড়া নৌকার প্রার্থীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মোজাম্মেল হকের তৃণমূলে জনপ্রিয়তা রয়েছে।
অপরদিকে বিএনপি দলীয় প্রতীকে মাঠে না থাকলেও তারা এই নির্বাচনকে দলীয় জনপ্রিয়তার পরীক্ষা হিসেবেই দেখছে। এ জন্য উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ের সর্বোচ্চ নেতারা এই উপনির্বাচন ঘিরে মাঠে রয়েছেন।
নিজ দলীয় কোন্দলের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিউর রহমান বলেন, ‘ বিভিন্ন কারণে হয়তো ইউনিয়নের কিছু নেতা-কর্মী এখনো আমার বিরুদ্ধে কথা বলছে। তবে সময় গড়ালে ধীরে ধীরে সব মিটে যাবে। আওয়ামী লীগের সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে এ নির্বাচনে বিপুল ভোটে নৌকাকে জয়লাভ করাবে।’
অপরদিকে ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব ও সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছি। তারপরও দলীয় নেতা-কর্মীরা আমার পক্ষে আছেন। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তবে এবার নৌকার ভরাডুবি হবে।’