Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

শত পরীক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা

শত পরীক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ

কলেজের গেট ধরে ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যকে মিনতি করছেন এক যুবক। তাঁর ভাঙা গলায় একটাই কথা, ‘আমাকে একটু ভেতরে যেতে দিন। আমার পরীক্ষা ভালো হবে। আমি খুব সমস্যায় আছি ভাই। চাকরিটা আমার খুব দরকার।’

যুবকের নাম তৈয়বুর রহমান। কাছে যেতেই সে বলল, ‘ভাই আমাকে একটু পরীক্ষার হলে যেতে দেন না। আমি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আনতে ভুলে গেছি। সেই সকাল ৮টায় আবার বাড়ি শ্রীপুর উপজেলায় ফিরে গেছি এনআইডি আনতে। এসে দেখি সাড়ে ১০টার বেশি বাজে। এরপর থেকে চেষ্টা করছি কিন্তু আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’ তৈয়বুর যখন কথা বলছিল তখন ঘড়িতে ১১ বেজে ২ মিনিট।

তৈয়বুর আরও বলেন, ‘মা নিজের কাছে। বাবা ভাইদের ভাগে বসবাস করে। কিন্তু মাকে দেখতে টিউশনি করতে হয়। এই চাকরির পরীক্ষা হচ্ছে দুই বছর পর। এই সময়ে আমার সরকারি চাকরির বয়স ও শেষ। তাই এটা না দিতে পারলে আমার আর স্বপ্ন নেই নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে।’

একই সমস্যার কথা জানালেন রাশেদুল ইসলাম। তিনি পরীক্ষা দিতে ঢাকা থেকে ভোর রাতে মাগুরা এসেছেন। মাগুরা পলিটেকনিক স্কুল ও কলেজে তাঁর কেন্দ্র। ১১টার একটু আগে গেটে এলে তাঁকেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সে অনুনয়-বিনয় করছে গেটে থাকা প্রহরীদের। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছে না।

রাশেদুর জানান, আমি পরিবারের বড় ছেলে। আমার প্রস্তুতি ভালো। কিন্তু সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রে ঢোকার কথা থাকলেও আমি ১১টার ৫ মিনিট আগে গেটে আসি। কিন্তু আমাকে হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আমার চাকরির বয়স গত জানুয়ারি মাসে শেষ। আমি আর জীবনে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে পারব না। আমার সব স্বপ্ন চুরমার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমার এক মাসের বাচ্চা রয়েছে। ওর বাবা অন্যত্র বিয়ে করে আমাকে ছেড়ে দিয়েছেন। এখন চাকরীটাই শক্তি। কিন্তু ভালো প্রস্তুতি থাকলেও এখন জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না। আমার সব স্বপ্ন এবার শেষ।’

মাগুরা আদর্শ কলেজ কেন্দ্রে দেখা যায় ৭ শিক্ষার্থী প্রধান ফটক ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা পরীক্ষা দিতে এসেছেন জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া। পরীক্ষা শুরু হবে ১১টায় তাই তাঁরা ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে এসেছিলেন। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র না আনার জন্য আবার দোকানে ফেরত যেতে হয়েছে। দোকান থেকে একটি প্রিন্ট কপি আনা হলেও পরীক্ষার হলে তাঁদের আর প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

এদের মধ্যে মো. সেলিম জানান, অনেক কেন্দ্রে সাড়ে দশটার পরও অনেককে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। অথচ এই কেন্দ্রে এতটা কড়াকড়ি যে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে এসেও আমরা কেউ ই পরীক্ষার হলে যেতে পারছি না। এভাবে আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি করার কোনো মানে হয় না। আমরা তো পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর আসিনি।

মাগুরায় ২৫টি কেন্দ্রে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ১১৮৪৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়ার কথা। তবে বেশির ভাগ কেন্দ্রে জাতীয় পরিচয়পত্র না আনার জন্য অনেককে বিভিন্ন দোকানে ছুটতে দেখা গেছে। এতে নির্দিষ্ট সময়ে তাঁরা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

এ বিষয়ে মাগুরা জেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শতাধিক পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। তবে নির্দিষ্ট করতে সময় লাগবে। খাতাগুলো সংরক্ষণের কাজ চলছে।

তিনি আরও জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে এটা প্রবেশপত্রে উল্লেখ ছিল। কিন্তু তা যদি পরীক্ষার্থীরা ভুলে যান তাহলে সে দায় আমরা কোনোভাবেই নেব না। নিয়ম সবার জন্যই সমান।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ