আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। অন্যান্য সব ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়া দুনিয়াতেও এখন নারীরা পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। দুদিন আগেই কোলের সন্তানকে নিয়ে ক্রিকেট মাঠে এসে সবাইকে চমকে দিয়েছেন পাকিস্তান নারী দলের অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ। তবে এ ক্ষেত্রে বিসমাহই একমাত্র নারী ক্রীড়াবিদ নন, যিনি সন্তানকে নিয়ে মাঠে এসেছেন। এর আগে নারী ক্রীড়াবিদদের মধ্যে সেরেনা উইলিয়ামস, ডারা টোরেস, শেলি অ্যান-ফ্রেজার-প্রাইস, কিম ক্লাইস্টার্স কিংবা সানিয়া মির্জারাও খেলার পাশাপাশি মা হিসেবে আলোচনায় এসেছেন। তেমনই পাঁচ ‘সুপার-মম’কে নিয়ে এই আয়োজন।
বিসমাহ মারুফ
ক্রিকেট
আইসিসি নারী বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান মহারণ। ম্যাচ শুরুর আগে দেখা গেল অভূতপূর্ব সুন্দর এক দৃশ্য। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের ছোট্ট সন্তানকে নিয়েই টিম বাস থেকে নেমে স্টেডিয়ামে ঢুকছেন বিসমাহ মারুফ। মা হওয়ার পর একটা সময় ক্রিকেট ছেড়ে দেবেন ভেবেছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। অথচ ১২ মাসের ‘ছুটি’ কাটিয়ে আবার দেশের জার্সিতে মাঠে এলেন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। ম্যাচ শেষে বিসমাহর মেয়েকে ঘিরে ভারতীয় নারী ক্রিকেটারদের খুনসুটির দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।
টেনিস
মা হওয়ার আগেই আলোচনার ঝড় তোলেন ‘সুপার-মম’খ্যাত টেনিস কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামস। সন্তানসম্ভবা অবস্থায় কোর্টে নেমে গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন সেরেনা। ক্রীড়াজগতে নারী-পুরুষ বৈষম্য নিয়েও সব সময় সরব সেরেনা। বিভিন্ন সময় সেরেনা কথা বলেছেন কর্মজীবী মায়েদের পক্ষে। এক সাক্ষাৎকারে সেরেনা বলেছিলেন, ‘মা হওয়া একটা দারুণ ব্যাপার। কিন্তু একজন নেতা হতে পারার অর্থ হচ্ছে, আমার মেয়ে আমাকে দেখিয়ে গর্বের সঙ্গে বলতে পারবে, “আমার মা এমন।”’
সাঁতার
ডানা টোরেসকে বলা হয় অলিম্পিক মায়েদের অ্যাম্বাসেডর। মেয়ে জন্ম দেওয়ার পর ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে তিনটি রুপার পদক জিতেছিলেন ডারা। তিনি ছিলেন প্রথম মার্কিন সাঁতারু, যিনি পাঁচটি অলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে ডারা অলিম্পিকে পদক জিতেছিলেন ১২টি। শুধু এটুকুই নয়, ডারা প্রথম নারী হিসেবে ৪০ বছরের বেশি বয়সেও অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন সময় পদক জেতার পর মেয়েকে কোলে নিয়ে ছবি তুলতেও দেখা গেছে ডারাকে।
টেনিস
২০১৩ সালের পর ২০২০ সালের ইউএস ওপেন পর্যন্ত কোনো গ্র্যান্ড স্লামের সেমিফাইনালে খেলতে পারেননি ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা। অথচ এর আগেই দুবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে চমক দেখিয়েছিলেন আজারেঙ্কা। তবে সেরেনা উইলিয়ামসের সঙ্গে সেবারের সেমিফাইনালটা ছিলেন বিশেষ ম্যাচ। কারণ, সেদিন দুজন মা একসঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটাও জিতেছিলেন আজারেঙ্কা। তবে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শুধু মা হয়ে থাকতে চান না, খেলোয়াড় হিসেবে ম্যাচও জিততে চান।
স্প্রিন্ট
সর্বকালের সেরা অ্যাথলেটদের তালিকায় ইতিমধ্যে নিজের নাম লিখিয়েছেন শেলি-অ্যান ফ্রেজার-প্রাইস। তবে একজন মা হিসেবেও তিনি সবার কাছে আদর্শ হতে পারেন। ২০১৬ রিও অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় ১০০ মিটার স্প্রিন্টে হারার পর মা হওয়ার জন্য বিরতি নেন ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড থেকে। তবে মাতৃত্বের স্বাদই যেন বদলে দেয় শেলিকে। এরপর দোহায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নিজের চতুর্থ ১০০ মিটার শিরোপা জিতে নেন শেলি। নিজের সেই জয় ছেলে জিয়নকে নিয়ে উদ্যাপন করেন শেলি।