নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সম্মানীর টাকা কম দেওয়া নিয়ে হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করার পর তিনি শিক্ষকদের টাকা দিয়েছেন। নতুন শিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণ শেষে গত রোববার সন্ধ্যায় মোহনপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি, ভ্যাটের টাকা নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝিতে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে অবরুদ্ধ করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নতুন শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য শিক্ষকদের এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল। পাঁচ দিনের এই প্রশিক্ষণে মোহনপুর উপজেলার ৪৪টি মাধ্যমিক স্কুল ও ১৮টি মাদ্রাসার ৬৩৮ জন শিক্ষক অংশ নেন। তাঁদের প্রত্যেকের সম্মানী ছিল ৫ হাজার ১৩০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিদিন অংশগ্রহণকারীদের জন্য মাথাপিছু ৮০ টাকার নাশতার বরাদ্দ ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোহনপুর উপজেলার একাধিক শিক্ষক জানান, প্রথম দুই দিন যে নাশতা দেওয়া হয়েছে; তা কোনোভাবেই ৮০ টাকার বলা যাবে না। সব মিলিয়ে বড়জোর ২৫ থেকে ৩০ টাকা হবে। এ জন্য শিক্ষকেরা সবাই মিলে জানান, তাঁরা নাশতা খাবেন না; এর বিনিময়ে তাঁরা টাকা নেবেন।
তবে শিক্ষা কর্মকর্তারা বলেন, তাঁরা ৮০ টাকার বদলে ৫০ টাকা করে তিন দিনের জন্য ১৫০ টাকা দিতে পারবেন। শিক্ষকেরাও সেটি মেনে নেন।
শিক্ষকদের হিসাবে, প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁরা ৫ হাজার ১৩০ টাকা এবং তিন দিন নাশতা না করার কারণে ১৫০ টাকা পান। সব মিলিয়ে টাকার পরিমাণ ৫ হাজার ২৮০। কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা থেকে ৮০ টাকা করে কেটে রাখেন শিক্ষা কর্মকর্তা। এতে শিক্ষকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
তখন শিক্ষকদের বাধার কারণে ট্রেনিং সেন্টার থেকে বের হতে পারছিলেন না কর্মকর্তারা। পরে তাঁরা বাধ্য হয়ে প্রত্যেককে ৫ হাজার ২৭০ টাকা করে দিয়ে ট্রেনিং সেন্টার ছেড়ে গেছেন। প্রত্যেকের অন্য ১০ টাকা কাটা হয়েছে রাজস্ব স্ট্যাম্পের জন্য। শিক্ষকেরা এটি মেনে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুক্তাদির আহম্মদ বলেন, টাকা কম দেওয়া হচ্ছিল এটি ঠিক নয়। আসলে ভ্যাটের একটা বিষয় নিয়ে জটিলতা হয়েছিল। পরে সমাধান করা হয়েছে। তাঁকে কেন্দ্রে আটকে রাখা কিংবা অবরুদ্ধ করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও দাবি করেন শিক্ষা কর্মকর্তা।