রোগমুক্ত প্রাণী বা নিরাপদ প্রাণিজাত পণ্য আমদানি নিশ্চিত করতে সংশোধন করা হচ্ছে বিদ্যমান পশু ও পশুজাত পণ্য সংগনিরোধ আইন, ২০০৫। বিদেশ থেকে প্রাণী আমদানির পর সেটি রোগাক্রান্ত কি না, তা নিশ্চিত হতে ওই প্রাণীকে কোয়ারেন্টিনে অর্থাৎ আলাদা করে রাখতে হবে।
কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রাণীর ছাড়পত্র বা স্বাস্থ্য সনদ। সংশোধিত আইন কার্যকর হলে গরু, মহিষ, উট, ছাগল-ভেড়া ও কুকুর-বিড়ালকে পশু বলা যাবে না। ‘পশু’র বদলে ‘প্রাণী’ লিখতে ও বলতে হবে। এ ছাড়া অবৈধভাবে প্রাণী ও প্রাণিজাত পণ্য আমদানি করলে অনধিক সাত বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে এই সাজা ২ বছরের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা। আইনের নাম পরিবর্তন ও শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে ‘বাংলাদেশ প্রাণী ও প্রাণিজাত পণ্য সংগনিরোধ (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, প্রস্তাবিত খসড়াটি যাচাই-বাছাই করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। শিগগির অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
আইনটি সংশোধনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে খসড়া প্রণয়নকারী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার উপসচিব মৃণাল কান্তি দে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর আগের করা আইনটি যুগোপযোগী করা ছিল সময়ের দাবি। মূলত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের নামও বদলে ‘পশু’ শব্দের বদলে ‘প্রাণী’ করা হয়েছে। আইনে পশু থাকায় নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে হয়। এ কারণে আইনের নাম ও বিভিন্ন স্থানে পশুর বদলে প্রাণী করা হয়েছে।
এ ছাড়া নিরাপদ খাদ্যের প্রতি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে রোগাক্রান্ত প্রাণী বা প্রাণিজাত পণ্য আমদানিতেও সরকার জিরো টলারেন্স (বিন্দুমাত্র ছাড় না দেওয়া) নীতি গ্রহণ করেছে। বাইরে থেকে বন্য প্রাণী বা গরু-মহিষ আমদানি করলেও কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। এসব শর্তসহ শাস্তি ও জরিমানা কয়েক গুণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কর্মকর্তা মনে করেন, প্রস্তাবিত আইনটি বাস্তবায়িত হলে রোগমুক্ত প্রাণী বা নিরাপদ প্রাণিজাত পণ্য আমদানি নিশ্চিত হবে।