ষষ্ঠ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দিনাজপুর ও গাইবান্ধার ৩০ ইউপিতে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট হয়। ভোটকেন্দ্রে সকালের দিকে উপস্থিতি তেমন না থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বাড়ে। তবে, ইভিএমের মাধ্যমে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় সময় বেশি লাগে। অনেকের আঙুলের ছাপ না মেলায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। দু-তিনবার চাপ দিতে দেখা যায় অনেককে। এতে ভোটারদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেক ভোটারকেই বিরক্ত হতে দেখা যায়। ভোটকেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আনসার ও পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি টহল দেয়।
দিনাজপুর: ৪ উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে মোট ১ হাজার ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্যে দিনাজপুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৯৭ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিরল উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২২ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৬৮ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৫৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ঘোড়াঘাটের ৪ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৯২ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৫৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ ছাড়া বীরগঞ্জে ২টি ইউনিয়নে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ২০ ও ৮৬ জন সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
গাইবান্ধা: সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর, নলডাঙ্গা, দামোদরপুর, ফরিদপুর, ধাপেরহাট, ভাতগ্রাম, ইদিলপুর ও খোর্দ্দ কোমরপুর ইউনিয়নে গতকাল ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নলডাঙ্গা ইউনিয়নের মানদুয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৪৪৫ জন হলেও বেলা ৩টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ হয়েছে ১ হাজার ৫৪৫ জনের। কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের লাইন দীর্ঘ হলেও ভোট দিতে সময় লাগছে, এ জন্য কিছুটা দেরি হচ্ছে বলে জানান কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বলেন, ভোটারদের ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটের ব্যাপারে ধারণা না থাকায় প্রায় সবাইকে বুঝিয়ে দিতে হচ্ছে। এ জন্য প্রায় দ্বিগুণ সময় বেশি লাগছে।
প্রতাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আব্দুল মালেক বলেন, ‘কখনো এই মেশিন চোখে দেখিনি। কীভাবে ভোট দিব জানি না। ভেতরে যাই, দেখি কী হয়। তবে শুনেছি ঝামেলা হয় না ভোট দিতে। কাগজে চেয়ে হামার মেশিনে ভালো।’
প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দিয়ে আসা জরিনা বেগম বলেন, ‘প্রথমে ভয় লাগছিল, কোথায় ভোট দেই আর কোথায় যায়—এটা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। এখন দেখছি ভালোভাবেই ভোট দেয়া যায়।’