ধর্ষণ মামলায় রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভার মেয়র আল মামুন খান বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। অন্যদিকে পৌরসভা নির্বাচনের প্রায় এক বছর সাত মাস পেরিয়ে গেলে এখনো গঠন করা হয়নি প্যানেল মেয়রের পদ, যে কারণে প্রায় এক সপ্তাহ থেকে সব কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
পুঠিয়া পৌরসভার কর্মচারী ও কাউন্সিলরা বলছেন, ‘মেয়রের নামে মামলার পর থেকে দাপ্তরিক সব কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। প্রতিদিন শত শত লোক সেবা নিতে এসে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কাজ না করে তাঁদের ফিরে যেতে হচ্ছে।’
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর পুঠিয়া পৌর নির্বাচন হয়। নির্বাচনে নতুন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আল মামুন খান। এরপর গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের দায়িত্ব বুঝে নেন। তবে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন অনুযায়ী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রথম কার্যসভা থেকে এক মাসের মধ্যে কাউন্সিলরদের মধ্যে থেকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তিন সদস্যের একটি প্যানেল মেয়র গঠনের বিধান রয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর থাকবেন; কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে এখনো পর্যন্ত এই পৌরসভায় প্যানেল মেয়র
নির্বাচন হননি।
সামছুল হক নামের একজন পৌরবাসী বলেন, ‘কাগজপত্রে কিছু জটিলতা থাকায় গত সপ্তাহ থেকে পৌর কার্যালয়ে ঘুরছেন তিনি; কিন্তু মেয়র না থাকায় অফিস থেকে সে কাগজগুলো দেওয়া হচ্ছে না।’
নাম না প্রকাশের শর্তে পৌরসভার এক কাউন্সিলর বলছেন, ‘পৌরসভায় এবার নির্বাচনের পর থেকে দপ্তরে ক্ষমতাসীন দলের একটা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছেন মেয়র। যে কারণে প্যানেল মেয়র এখনো গঠন করা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গতবার মেয়রের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা হওয়ায় তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। এবার আরেক মামলার তিন দিন পর তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। কবে জামিন পাবেন তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। এদিকে পৌরসভায় প্যানেল মেয়রও নেই। এ জন্য প্রায় সব কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।’
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম দাপ্তরিক কার্যক্রমে স্থবিরতার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘মেয়র না থাকলে অফিসের কাজে জটিলতা দেখা দেয় আর বর্তমানে এখানে প্যানেল মেয়রও নেই। যে কারণে সমস্যাটা অনেক বড় হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্যানেল মেয়রের বিষয়টি তাঁরা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে, অল্প কয়েক দিনের মধ্যে প্যানেল মেয়রের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।’
উল্লেখ্য, বিভিন্ন প্রলোভনে স্থানীয় এক নারীকে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগে ৫ সেপ্টেম্বর থানায় মামলা হয়। এ ঘটনায় গত বুধবার বরগুনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পৌর মেয়রকে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।