চিকিৎসক-সংকটে কোনোমতে খুঁড়িয়ে চলছে খুলনার একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতাল শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালটি। এ হাসপাতাল ভাসকুলার সার্জারি, বার্ন ইউনিট ও নিউরো সার্জারি বিভাগের ২৪টি পদের বিপরীতে আছেন মাত্র চারজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ফলে এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।
এমন কম সংখ্যক চিকিৎসক নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস পেয়েছেন তারা। জানা গেছে, কম খরচে সরকারিভাবে চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে খুলনার গোয়ালখালি এলাকায় ২০১০ সালে চালু হয় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে বর্তমানে ২১০টি শয্যা চালু আছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার করে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়াই ছিল হাসপাতালটির অন্যতম লক্ষ্য। তবে চালুর পর থেকেই এটি চলছে নানা সংকট আর সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে। সম্প্রতি কয়েকজন চিকিৎসক অবসরে যাওয়ায় হাসপাতালটিতে সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথের সঙ্গে। তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের একমাত্র চিকিৎসক অবসরে গেলে এ বিভাগে চিকিৎসাই বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের ৮টি পদের বিপরীতে ৩ জন চিকিৎসককে দিয়ে চলছে চিকিৎসা। একই অবস্থা বার্ন ও সার্জারি ইউনিটেরও। এ বিভাগও চলছে ৮ পদের বিপরীতে ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে। ফলে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন এখানকার চিকিৎসকেরা। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে রোগীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয় বলেও তিনি জানান।
এতে করে ভোগান্তিতে পড়ছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী। একটি অস্ত্রোপচারের জন্য দুই মাস পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হয় রোগীদের। এতে বাড়ছে চিকিৎসা ব্যয়। বাড়ছে ভোগান্তি।
এ ব্যাপারে কথা হয় ভুক্তভোগী মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর আত্মীয় বার্ন ইউনিটে ভর্তি রয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় সুচিকিৎসা হচ্ছে না। একই সমস্যার কথা জানান আরেক ভুক্তভোগী মো. আলমগীর হোসেন। দেড় মাস ধরে অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তিনি তা করাতে পারছেন না।
চিকিৎসক-সংকটের কথা স্বীকার করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টার কথা জানান হাসপাতালের পরিচালক। হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ আবু শাহিন বলেন, চিকিৎসকের সংকট সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঢাকায় ঊর্ধ্বতন মহলে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশ্বাসও মিলেছে। হয়তো দ্রুত সমাধান হবে।