গোপালপুরের মির্জাপুর ইউনিয়নের ধুলটিয়া গ্রামের ৩০০ পরিবার চাঁদা দিয়ে তৈরি করছে একটি বাইচের নৌকা। এর দৈর্ঘ্য হবে ৬৯ হাত। গত সপ্তাহে নৌকাটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। আর দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে এর কাজ শেষ হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
নৌকাটি ঘিরে গ্রামের শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের মধ্যেও উৎসব ভাব দেখা দিয়েছে। তাঁরা দিন গুনছেন কখন থইথই নদীর পানিতে নৌকাটি নামানো হবে। ঢাক-ঢোলের তালে গ্রাম বাংলার গান আর মাঝি-মাল্লার বইঠার ছন্দে শান্ত খালবিল ও নদী মাতিয়ে তুলবে।
বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন নদ-নদী ও বিল-বাঁওড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নৌকাবাইচ। একে ঘিরে গ্রামগুলোতে অন্যরকম উম্মাদনা চলছে। এরই অংশ হিসেবে নৌকাটি তৈরি হচ্ছে।
গত সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, কালিহাতী উপজেলার নৌকা নির্মাণের কারিগর আবদুর রহিম নৌকাটি নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাঁর শিষ্যদের নিয়ে দিনরাত কাজ করছেন। আর চারপাশে জটলা পাঁকিয়ে শ্রমিকদের কাজ দেখছেন গ্রামের মানুষ। এ দলে আছে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও।
নৌকা তৈরির কারিগর আবদুর রহিম বলেন, পাঁচজন সহযোগী তাঁকে নৌকা তৈরিতে সহায়তা করছেন। বাইচের নৌকাটি নির্মাণে মোট ১০ দিন সময় লাগবে। এরপরই নৌকাটি প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। তিনি দাবি করেন, ৩৩ বছরে সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনি নানা ধরনের আনুমানিক দুই শতাধিক নৌকা তৈরি করেছেন।
নৌকা নির্মাণ কমিটির আহ্বায়ক ধুলটিয়া গ্রামের লিয়াকত আলী বলেন, নৌকাটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলার নবাব একতা ধুলটিয়া’। আনুমানিক ১০০টি সিফটি পাইয়া ও গজারি গাছের কাঠ দিয়ে নৌকার নির্মাণকাজ চলছে। এতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ টাকা।
নৌকা নির্মাণ কমিটির সদস্য আলতাফ মিয়া বলেন, নৌকাটি বাইচ দিতে ৬২ জন বাইচার (মাঝি) প্রয়োজন হবে। গ্রামের ৩০০টি পরিবার খুশি মনে চাঁদা দিয়ে নৌকা তৈরির খরচ জোগার করেছে।