গত মে মাসে ওপেন এআই একটি ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়ে এসেছিল। তাতে ব্যবহার করা হয় হলিউড অভিনেত্রী স্কারলেট জোহানসনের কণ্ঠ। ২০১৩ সালে ‘হার’ সিনেমায় এ ধরনের একটি চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছিলেন স্কারলেট। তিনি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করেন, সিরি নামের ওই চরিত্রের কণ্ঠের সঙ্গে ওপেন এআইয়ের ওই ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের কণ্ঠের অদ্ভুত মিল। খেপে যান অভিনেত্রী। কারণ, তাঁর কণ্ঠ ব্যবহার করার জন্য কোনো অনুমতি নেয়নি ওপেন এআই। স্কারলেটের কড়া পদক্ষেপে বাধ্য হয়ে পিছু হটে প্রতিষ্ঠানটি।
এমনটা ঘটেছিল টম হ্যাঙ্কসের ক্ষেত্রেও। গত আগস্টে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল। যেখানে দেখা যায়, একধরনের অলৌকিক নিরাময় ওষুধের গুণগান গেয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রচার করছেন অস্কারজয়ী এ অভিনেতা! বিষয়টি টমের দৃষ্টিগোচর হতেই সতর্ক করেন, এআই দিয়ে তাঁর প্রতিলিপি তৈরি করে এ কাজ করা হয়েছে। এসব ফাঁদে পা না দিতে ভক্তদের অনুরোধ করেন টম।
সবচেয়ে ভয়াবহ কাণ্ডটি ঘটেছিল টেলর সুইফটকে ঘিরে। এআইয়ের মাধ্যমে সুইফটের নকল ভিডিও বানিয়ে নিজের পক্ষে জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টির জোর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন গায়িকা। পরে কমলা হ্যারিসের পক্ষে নিজের সমর্থনের কথা জানিয়ে দেন টেলর। এ ছাড়া, তাঁর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে অনেক প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন নকল পণ্যের বিজ্ঞাপন, কনসার্টের টিকিট বিক্রির নামে প্রতারণা—এসবে ব্যবহার করা হয়েছে সুইফটের ছবি ও ভিডিও।
তারকাদের নাম, ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করে প্রতারণার কৌশল অনেক পুরোনো। তবে ডিপফেক বা এআই প্রযুক্তির সহজলভ্যতার ফলে এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা ইদানীং অনেক বেড়েছে। অনলাইন স্ক্যামের ক্ষেত্রে এ বছর যেসব তারকার নাম, ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে, তাঁদের শীর্ষ ১০ জনের নাম প্রকাশ করেছে কম্পিউটার সিকিউরিটি কোম্পানি ম্যাকাফি। টম হ্যাঙ্কস, স্কারলেট জোহানসন, টেলর সুইফট, জনি ডেপের মতো জনপ্রিয় তারকার নাম রয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত এ তালিকায়।
সতর্ক করে ম্যাকাফির হেড অব থ্রেট রিসার্স অভিষেক কারনিক বলেন, ‘সাইবার ক্রিমিনালরা এখন উন্নতমানের বিভিন্ন টুল ব্যবহার করছে। তারকাদের নাম, ছবি ও ভিডিও প্রতারণার ক্ষেত্রে কার্যকরী টোপ। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। কোনো লিংকে ক্লিক করার আগে দুবার ভাবতে হবে। যদিও এআই-জেনারেটেড কনটেন্ট সব সময় ক্ষতিকর নয়, তবে এতে করে আসল-নকল চেনাটা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।’