ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ৪০ বছরের পুরোনো রংপুর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট। বিশেষ করে শর্টসার্কিট থেকে প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এই বিপণিবিতান সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা দাবি আদায়ে জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা গতকাল দুপুরে বিপণিবিতানের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এ সময় তাঁরা দাবি পূরণ না হলে বৃহৎ আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মাশরাফী মোবাইল টেলিকমের মালিক গোলাম মোরশেদ মাশরাফী বলেন, ‘জেলা পরিষদ মার্কেট নির্মাণ হয়েছে প্রায় ৪০ বছর আগে। সেই সময়কার বৈদ্যুতিক তার দিয়ে মার্কেটের দোকানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে করে প্রায় সময়ই শর্টসার্কিট হয়ে আগুন লেগে যাচ্ছে। মার্কেটের ট্রান্সফরমাটি ঠিকভাবে কাজ না করায় প্রায়ই বিভিন্ন তলায় বিদ্যুৎ থাকছে না। তিন দিন ধরে তৃতীয়তলায় বিদ্যুৎ নেই। ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না।’
সুপার মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী তানভির টেলিকমের স্বত্বাধিকারী সুমন মিয়া অভিযোগ করেন, ‘প্রতি মাসে উন্নয়ন বাবদ ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়। উন্নয়নের তো কিছুই হয় না। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। সবসময় ভয় হয় কখন দুর্ঘটনা ঘটে। পুরোনো ট্রান্সফরমারের কারণে এখানে আগেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে আর যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য আজ (বৃহস্পতিবার) দোকান বন্ধ রেখে আমরা বিক্ষোভ করেছি, যাতে মার্কেটের সার্বিক দিক উন্নয়ন করা হয়।’
এ বিষয়ে সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বুলবুল জানান, অনেক আগে থেকেই বিপণিবিতানের বৈদ্যুতিক লাইনগুলো জরাজীর্ণ হয়ে আছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বহু বছর ধরে সংস্কার না হওয়াতে ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে অথচ এখানকার ৩৩৩টি দোকান থেকে প্রতি মাসে ভাড়া ছাড়াও ভবন সংস্কারের জন্য ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়।
এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে কমপক্ষে ১৮ বার শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। আগুনে বেশ কয়েকটি দোকান ভস্মীভূত হয়েছে। তারপরও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, কিন্তু জেলা পরিষদ থেকে মার্কেট সংস্কারে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
বিপণিবিতান সংস্কারসহ ব্যবসায়ীদের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল রাব্বী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মার্কেটের ব্যবসায়ীরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমরা তাঁদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দেখব।’