লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে স্ত্রী নিশি মাহমুদকে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেছেন ছাত্রলীগ নেতা মুশফিক মাহমুদ। মামলায় উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিমসহ নয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি (রামগতি অঞ্চল) আদালতে মুশফিক বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
বাদীর আইনজীবী ফাহাদ ইসলাম জনি জানান, মামলাটি আদালতের বিচারক মোসাম্মৎ নুসরাত জামান আমলে নিয়েছেন। আসামি তন্ময় কুমার দাসের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে অবস্থান চিহ্নিত করে নিশি মাহমুদকে উদ্ধারে রামগতি থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আসামি তন্ময় পটুয়াখালী জেলা সদরের লাউকাটি গ্রামের নব কুমার দাসের ছেলে। অন্য আসামির হলেন রামগতি উপজেলার চরসীতা গ্রামের প্রদন্ন মজুমদার, নিরাশা মজুমদার, পটুয়াখালীর লাউকাটি গ্রামের কমল দাস, নবকুমার দাস, অয়ন দাস, প্রান্ত কুমার দাস, ধনঞ্জয় কুমার দাসসহ অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচজন।
বাদী মুশফিক ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও রামগতির চরসীতা গ্রামে এ জেড এম মুনছুরের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্র জানা যায়, নিজ গ্রামের অনিরুদ্ধ মজুমদারের মেয়ে প্রজরি মজুমদার নিশির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ছাত্রলীগ নেতা মুশফিকের। একপর্যায়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর তাঁরা বিয়ে করেন। এ সময় নিশি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে তাঁর নাম পরিবর্তন করে নিশি মাহমুদ রাখা হয়।
গত ১১ নভেম্বর নিশির বাবা অনিরুদ্ধ পরলোক গমন করেন। বাবার শেষকৃত্যে অংশ নিতে নিশি বাড়িতে যান। বাড়ি গেলে ইউপি চেয়ারম্যান জসিমসহ আসামিরা নিশিকে আটকে রাখেন। পরে তাঁকে অপহরণ করে পটুয়াখালী তন্ময়দের বাড়ি সাত দিন আটকে রাখা হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে মুশফিক পটুয়াখালী তন্ময়ের এলাকায় যান।
সেখানে গিয়ে মুশফিক জানতে পারেন তাঁর স্ত্রীকে আটকে রেখে জোর করে তন্ময়ের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আসামিদের বিরুদ্ধে নিশিকে হত্যা করে লাশ গুম করার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। নিশিকে ফিরে পেতে মুশফিক আদালতে মামলা করেন।
মামলার বাদী মুশফিক মাহমুদ বলেন, ‘নিশি আমার বিবাহিত স্ত্রী। চেয়ারম্যান জসিম কারসাজি করে আমার স্ত্রীকে অভিযুক্তদের দিয়ে অপহরণ করিয়েছেন। নিশিকে আমি অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই। তাঁরা আমার স্ত্রীকে অন্য এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।’
ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, ‘মুশফিক নিশিকে জোর বিয়ে করতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি। নিশিকে তার সিদ্ধান্তে আমরা পটুয়াখালী নিয়ে বিয়ে দিয়েছি। মুশফিক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।’
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘মুশফিক আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। এখনো আমার কাছে আদালতের আদেশের কপি আসেনি। আদেশের কপি পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’