Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

দুমুঠো ভাতের জন্য লড়াই প্রতিবন্ধী রাব্বির

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি

দুমুঠো ভাতের জন্য লড়াই প্রতিবন্ধী রাব্বির

রাব্বি আর রায়হান, সম্পর্কে খালাতো ভাই তারা। দুজনের মধ্যে বড় রাব্বি। বয়স ১৪। কিন্তু সে জন্ম থেকে শারীরিক ও বাক্প্রতিবন্ধী। রাব্বি পৃথিবীর আলোর মুখ দেখার আগেই তার বাবা মারা যান। সেই থেকে শুরু মা-ছেলের সংগ্রাম।

আর সাত বছরের রায়হানের বাবা থেকেও নেই। মা-ছেলেকে ফেলে অন্যত্র সংসার পেতেছে তার বাবা। তাই অভাব-অনটনের সংসারে রাব্বি-রায়হানকে দুবেলা পেটপুরে খাওয়ার জন্য হাত পাততে হচ্ছে অন্যের কাছে। তাতে সারা দিনে যে টাকা পায়, তা দিয়ে দুবেলা-দুমুঠো খেতে পারে ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের মুচির পোল এলাকার রাব্বি-রায়হান।

জানা গেছে, রাব্বি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় লঞ্চ দুর্ঘটনায় মারা যায় তার বাবা। ফলে বিপাকে পড়তে হয় স্বামী হারা তাসলিমা বেগমকে। তার মধ্যে জন্মগতভাবে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে পৃথিবীতে আসে রাব্বি। নিজস্ব কোনো জমিজমা না থাকায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় কাজ করে সংসার চালান রাব্বির মা তাসলিমা বেগম।

একই অবস্থা খালাতো ভাই রায়হানের। মাকে রেখে অন্যত্র সংসার করছে তার বাবা। খোঁজ নেন না ছেলের। রায়হানের মা সায়েরা বিবিও বোনের মতো কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় মাটি কেটে রাস্তার সংস্কার করেন। তবে সায়েরার শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। অর্থের অভাবে চিকিৎসা তো দূরে থাক, প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে পারছেন না তিনি।

তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই জীবিকার তাগিদে রাব্বি ও রায়হান রাস্তায় নেমেছে। রায়হান বড় ভাই রাব্বিকে প্রতিদিন মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে একটি হুইলচেয়ারে করে ঠেলে নিয়ে যায় উপজেলার মঙ্গলসিকদার লঞ্চঘাটে। লঞ্চের যাত্রীদের কাছ থেকে সহযোগিতা চায় তারা। কোনো কোনো যাত্রী বাড়িয়ে দেন সহায়তার হাত। এভাবে প্রতিদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত যাত্রীদের কাছে চেয়েচিন্তে দেড়-দুই শ টাকা পান। এই টাকা ভাগ করে নেয় দুই ভাই। দুরন্তপনার বয়সে রাব্বি আর রায়হান সংগ্রাম করছে দুমুঠো খেয়ে পরে বাঁচার জন্য।

রাব্বি কথা বলতে না পারলেও রায়হান বলে, ‘মায় সারা দিন কাম করে, সংসার চালায়। মায় নিজেও অসুখ, তাই রোজ কামে যাইতে পারে না। আর খালার তো অসুখ। হের লইগাই দুই ভাই রোজ মঙ্গলসিকদার লঞ্চঘাটে ভিক্ষা করতে আসি। মানুষ দয়া কইরা যা দেয়; তাই দিয়া চলে আমাগোর সংসার।’

রাব্বি ও রায়হান লঞ্চঘাটের দোকানি ও স্থানীয়দের কাছে পরিচিত মুখ। তাঁরা মনে করছেন, সরকারের পক্ষ থেকে এই দুজনের পরিবারকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হোক। যাতে করে তাদের আর ভিক্ষা করতে না হয়।

ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান মৃধা বলেন, ‘সরকারি যেসব সহযোগিতা আসে, রাব্বি ও রায়হানের পরিবারকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। রাব্বির জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আশা করছি, সে শিগগির ভাতা পাবে।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ