শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথে আবার একটি ফেরি বিকল হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ফেরি কুঞ্জলতাকে। হঠাৎ বহর থেকে দুটি ফেরি কমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে এই নৌপথের যানবাহন পারাপার। শরীয়তপুরের নরসিংহপুর ফেরিঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় আছে তিন শতাধিক যান। ঘাট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেরি কেতকী যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে চাঁদপুর থেকে শরীয়তপুরের নরসিংহপুর আসছিল। মাঝ নদীতে ফেরির প্রপেলারের গার্ডার ভেঙে বিকল হয়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে ফেরির মাস্টার ফেরিটির গতিনিয়ন্ত্রণ করে ধীরে ধীরে চালিয়ে নরসিংহপুর ঘাটে নোঙর করেন। পরবর্তী সময়ে যানবাহন আনলোড করা হয়। মেরামতের জন্য ফেরিটি গতকাল শুক্রবার চাঁদপুর ডকে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় ৪ অক্টোবর রাতে এখানে থাকা ফেরি কুঞ্জলতাকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে নিয়ে যাওয়া হয়।
শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথে সাতটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হতো। হঠাৎ একটি ফেরি বিকল ও আরেকটি ফেরি সরিয়ে নেওয়ায় কমসংখ্যক যানবাহন পারাপার হচ্ছে। ঘাটটি দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪৫০ থেকে ৫০০ যানবাহন পারাপার হতো। এখন পারাপার করা যাচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০টি। যানবাহন পারাপার কমে যাওয়ায় নরসিংহপুর ঘাটে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। টার্মিনাল পূর্ণ হয়ে প্রতিনিয়ত সড়কে বৃদ্ধি পাচ্ছে যানবাহনের চাপ। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় আছে তিন শতাধিক পণ্যবাহী যান। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন কাঁচা ও পচনশীল পণ্যবাহী যানের চালক ও ব্যবসায়ীরা।
বরিশালের গৌরনদী থেকে পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংহপুর ঘাটে আটকা পড়েন চালক ইকবাল হোসেন। গতকাল বিকেলে পর্যন্ত ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পাননি তিনি। রোদের তাপ আর তীব্র গরমে পেঁয়াজ থেকে পানি বের হতে শুরু করেছে। এতে ক্ষুব্ধ ইকবাল বলেন, ‘আজ রাতের মধ্যে ফেরি পার হতে না পারলে সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাবে। তখন মালিককে কি জবাব দিব?’
ট্রাকচালক মইনুল বলেন, ‘গ্যাসের সিলিন্ডার নিয়ে ফরিদপুর থেকে নোয়াখালী যাচ্ছি। ৫ অক্টোবর থেকে ঘাটে আটকা পড়ে আছি। সাথে থাকা টাকা-পয়সাও শেষ। এখন মহাজনের থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা এনে ফেরি পার হতে হবে। এখানে থাকা-খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা শত শত ট্রাকচালক মহা বিপদের মধ্যে রয়েছি।’
নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বহরে দুটি ফেরি কম থাকায় যানবাহন কম পারাপার হচ্ছে। এ ছাড়া শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে রাতের বেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় এই ঘাটে যানবাহনের চাপও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে স্কেল করা বন্ধ রাখা হয়েছে। মেরামত শেষে বিকল হওয়া ফেরিটি বহরে যুক্ত হলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।