অটিজম নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বলে পরিচিত। এটি মস্তিষ্কের বিকাশজনিত জটিলতা, যেখানে আক্রান্ত শিশু ভাষার দক্ষতা ও সামাজিক মিথস্ক্রিয়া করতে পারে না।
অটিজম শনাক্ত করতে হলে দক্ষতা প্রয়োজন। কিন্তু সাধারণভাবে কোনো শিশু যদি তিনটি কাজ করতে না পারে, তাহলে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
তিনটি শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো:
- কারও সঙ্গে মিশতে না পারা
- ভাষার মাধ্যমে অর্থপূর্ণ যোগাযোগ করতে না পারা
- বারবার একই কাজ বা ব্যবহারের পুনরাবৃত্তি করা
এই সব শিশুর জন্য একটি সমন্বয় চিকিৎসাপদ্ধতি দরকার হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক কাজকর্ম করলে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের সামাজিক মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়; অর্থাৎ শিশু অন্যদের সঙ্গে মিশতে পারে ও যোগাযোগ স্থাপন করে, যা অটিজমের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। সাধারণত বেশির ভাগ অটিজম আক্রান্ত শিশু কো-অর্ডিনেশন বা মাংসপেশির সমন্বয়ে দুর্বল থাকে। নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দিয়ে অটিজমের মাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব।
- হাতের আঙুলের মাংসপেশির দুর্বলতার কারণে অনেকেই পেনসিল ধরতে পারে না বা খুব সূক্ষ্ম কাজ করতে পারে না। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন। যেমন কাদামাটি বা ময়দার খামির দিয়ে শিশুকে খেলতে দিন। নিজেই তার সঙ্গে খেলতে শুরু করুন। অনেক শিশু হাতে ধরতে চায় না, তাই তাদের ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে বারবার চেষ্টা করতে হবে।
- স্কোয়াটিং খুবই কার্যকরী একটি ব্যায়াম। প্রথমে শুরু করান চেয়ারে বসা-ওঠা দিয়ে। ১০ বার করে দিনে ২ বার। ধীরে ধীরে চেয়ার সরিয়ে দেবেন। কিন্তু একইভাবে হাঁটু ভাঁজ করে অর্ধ বসা এবং ওঠা করবে। দিনের কিছুটা সময় টয়লেট সিটিং চেষ্টা করতে হবে।
- যত বেশি তাকে বাইরে খেলাধুলায় আগ্রহী করা যায়, ততই ভালো। যেমন বল ছুড়ে দেওয়া। একটি বাস্কেটে বল ছুড়তে বলা। এই একটি কাজই বারবার করবে। প্রতিদিন একই নিয়মে একটি কাজ করলে শিশুর মনোযোগ যেমন বাড়বে, তেমনি মাংসপেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে শিশু নিজেকে আত্মবিশ্বাসী মনে করবে ও সামাজিকভাবে অন্যদের সঙ্গে মিশতে সহজ হবে।
- দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে শিশুর সঙ্গে রং নিয়ে
খেলতে হবে। যেমন একটি ত্রিভুজ এঁকে তাতে রং করতে বলা। খেয়াল রাখতে হবে সে যেন ধীরে ধীরে সময় নিয়ে কাজটি
শেষ করে। এর ফলে তার মনোযোগ বাড়বে।
লেখক: ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট, পিটিআরসি
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও পড়ুন: