হোম > স্বাস্থ্য

হরমোনজনিত রোগ বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে

ডা. নাজমা আক্তার

বন্ধ্যত্ব হলো প্রজননস্বাস্থ্য়ের একটি সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক সমীক্ষা অনুযায়ী, সারা বিশ্বে আনুমানিক ৪৮ মিলিয়ন দম্পতি বা ৪ কোটি ৮০ লাখ পুরুষ ও নারী আলাদাভাবে বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে মন ও পারিবারিক জীবনে।

বন্ধ্যত্ব সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে।

  • প্রাইমারি ইনফার্টিলিটি।
  • সেকেন্ডারি ইনফার্টিলিটি।

যখন কোনো দম্পতি তাঁদের প্রজনন বয়সকালে এক বছর বা তার বেশি সময় চেষ্টা করেও গর্ভধারণে ব্যর্থ হন, সেটা প্রাইমারি ইনফার্টিলিটি। অন্য়দিকে যাঁদের আগে কমপক্ষে একবার হলেও গর্ভধারণের ইতিহাস আছে কিন্তু পরে পুনরায় গর্ভধারণে ব্যর্থ হয়েছেন, সেটা সেকেন্ডারি ইনফার্টিলিটি।

নারীদের ক্ষেত্রে বন্ধ্যত্বের নানা কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • নানা কারণে ফেলোপিয়ন টিউবে ব্লক থাকা।
  • গর্ভাশয়ের প্রবাহজনিত বিভিন্ন রোগ, যেমন অ্যান্ডোমেট্রিওসিস।
  • গর্ভাশয়ের টিউমার বা ক্যানসার, জন্মগত ত্রুটি, যেমন দুই ভাগে বিভক্ত গর্ভাশয় ইত্যাদি।
  • ডিম্বাশয়ের নানা সমস্যা, যেমন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম।
  • প্রজনন-প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব ফেলে এমন অন্যান্য হরমোনবিষয়ক রোগ, যেমন পিটুইটারি গ্রন্থির অকার্যকারিতা বা টিউমার, থাইরয়েড হরমোন সমস্যা।

পুরুষদের ক্ষেত্রে বন্ধ্যত্বের সাধারণ কারণগুলো হলো

  • অপর্যাপ্ত বা অকার্যকর শুক্রাণু নিঃসরণ বা বীর্যপাতের সমস্যা।
  • বিভিন্ন ধরনের হরমোনজনিত রোগের পিটুইটারি, হাইপোথ্যালামাস বা শুক্রাশয়ের ওপর বিরূপ প্রভাব বিস্তারের ফলে এসব গ্রন্থি থেকে প্রয়োজনীয় প্রজনন হরমোন নিঃসরণ কমে যাওয়া।
  • পিটুইটারি গ্রন্থি বা শুক্রাশয়ের ক্যানসার বা টিউমারের ফলে রক্তে টেস্টোস্টেরন বা পুরুষ হরমোন নিঃসরণ কমে যাওয়া।
  • বিভিন্ন ওষুধের ক্ষতিকর প্রভাবে শুক্রাশয়ের কার্যকারিতা কমে যাওয়া।

এসব ছাড়া ব্যক্তিগত অভ্যাস, পারিপার্শ্বিক কিছু কারণও বন্ধ্যত্বের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমন–

  • নারীদের ক্ষেত্রে ৩৫ বা তার বেশি এবং পুরুষের ক্ষেত্রে ৪০ বা তার বেশি বয়স হলে গর্ভধারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ধূমপান
  • ডায়াবেটিস
  • প্রজননতন্ত্রবাহিত রোগ
  • অতিরিক্ত মোটা বা অতিরিক্ত শুকনো শরীর
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ ইত্যাদি।

বন্ধ্যত্বে ভুগছেন এমন নারী বা পুরুষের ক্ষেত্রে কিছু ব্যক্তিগত ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্য়মে বন্ধ্যত্বের কারণ নির্ধারণ করা হয়। 
নারীদের ক্ষেত্রে, তলপেটের আলট্রাসাউন্ড, হিস্টোরোস্কপি, লেপারোস্কপি, রক্তে থাইরয়েড, পিটুইটারি প্রজনন হরমোনের মাত্রা নির্ধারণ ইত্যাদি।

পুরুষের ক্ষেত্রে সিমেন অ্যানালাইসিস, রক্তে থাইরয়েড হরমোন, পিটুইটারি নিঃসৃত প্রজনন হরমোন, টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা নির্ধারণ, তলপেটের আলট্রাসাউন্ড বা প্রয়োজনে জেনেটিক পরীক্ষা ইত্যাদি।

বন্ধ্যত্বের কারণভেদে পুরুষ বা নারীদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরনের হরমোনের ওষুধ খেতে হতে পারে, ইনজেকশনের মাধ্যমে নিতে হতে পারে, এমনকি অপারেশনেরও প্রয়োজন হতে পারে। বর্তমানে ইনফার্টিলিটি সেন্টারগুলোয় নানা ধরনের উন্নত প্রযুক্তির চিকিৎসাব্যবস্থা চালু হয়েছে। যাঁরা বন্ধ্যত্বে ভুগছেন, তাঁরা দ্রুত হরমোন বা গাইনি ও প্রজননস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।বন্ধ্যত্ব প্রতিরোধ ও প্রজনন সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে যা করবেন,

  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
  • ধূমপান বাদ দিন।
  • পরিমিত ও সুষম খাবার খান।
  • মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপন করুন।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিভাগ মার্কস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা

হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি জানা যাবে মাত্র ৮০০ টাকার রক্ত পরীক্ষায়

হাঁচি-কাশি হলে অবহেলা নয়, সচেতনতা দরকার

মেয়েদের বিষণ্নতা বাড়ার কারণ সোশ্যাল মিডিয়া

মধ্যবয়সের খাদ্যাভ্যাস সুস্থ রাখতে পারে সত্তরেও

মনের সঙ্গে খাবারের ভূমিকা

ত্বক পরিচর্যায় কাঁচা আম

ক্লান্তি পিছু ছাড়ছে না, ভিটামিন ডি স্বল্পতায় ভুগছেন না তো?

লালার সাহায্যে প্রোস্টেট ক্যানসার নির্ণয় করা যাবে ঘরে বসেই: গবেষণা

গর্ভাবস্থায় মায়ের ডায়াবেটিস হলে সন্তান অটিস্টিক হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে: গবেষণা

বাংলাদেশ-ভারতসহ এশিয়ার ৪ দেশের খাবারে বিষাক্ত রাসায়নিক: গবেষণা