Ajker Patrika

ল্যুভর জাদুঘরের যাত্রা শুরু

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ১৪
ল্যুভর জাদুঘরের যাত্রা শুরু

দুই শতকের বেশি সময় এটি ছিল রাজপ্রাসাদ। তারপর আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১৭৯৩ সালের ১০ আগস্ট আত্মপ্রকাশ ঘটে জাদুঘর হিসেবে। গল্পটা বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘরের। 

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ সংগ্রহশালার একটি ল্যুভর মিউজিয়াম। ১১ হাজার বছরের মানবসভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করছে এমন বহু শিল্পকর্ম এবং স্মারক সংরক্ষিত আছে ল্যুভরে।

রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ বারো শতকে প্যারিসে একটি দুর্গ স্থাপন করেছিলেন। ওই জায়গাতেই ১৫৪৬ সালে রাজা প্রথম ফ্রান্সিস ল্যুভর রাজপ্রাসাদের গোড়াপত্তন করেন। ফ্রান্সিসের নানা ধরনে শিল্পকর্ম সংগ্রহের বাতিক ছিল। ল্যুভরকে নিজের রাজপ্রাসাদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন তিনি।

স্থপতি পিয়েরে লেসকোর তত্ত্বাবধানে হয় রাজপ্রাসাদ হিসেবে ল্যুভরকে গড়ে তোলার কাজ। ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় হেনরি এবং নবম চার্লসের শাসনামলেও ল্যুভর ও এর এলাকা সম্প্রসারণ করেন। সতেরো শতকে ল্যুভরের সবচেয়ে বেশি সম্প্রসারণ হয় ত্রয়োদশ লুই ও চতুর্দশ লুইয়ের শাসনামলে। উভয় রাজাই শিল্পকলাকে ব্যাপকভাবে প্রসারিত করেছিলেন।

চতুর্দশ লুই ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধে প্রথম চার্লসের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তাঁর শিল্প সংগ্রহটি পান এবং ল্যুভরে তা স্থানান্তর করা হয়। ১৬৮২ সালে চতুর্দশ লুই তাঁর আদালত ভার্সাইতে স্থানান্তরিত করেন। স্বাভাবিকভাবেই এ সময় থেকে প্রধান রাজকীয় বাসভবনের মর্যাদা হারায় ল্যুভর।

একপর্যায়ে ফ্রান্সে অনেকেই রাজকীয় সংগ্রহগুলো প্রকাশ্যে প্রদর্শনের জন্য দাবি জানাতে শুরু করেন। ফরাসি লেখক ও দার্শনিক ডেনিস দিদয়ো সর্বপ্রথম জনসাধারণের জন্য একটি জাতীয় শিল্প জাদুঘরের প্রস্তাব করেন।

লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা ‘মোনালিসা’কে বিবেচনা করা হয় ল্যুভরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হিসেবে১৭৫০ সালে রাজা পঞ্চদশ লুই কিছু নির্বাচিত চিত্রকর্ম লুক্সেমবার্গ প্যালেসে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন। তবে ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত একটি জাদুঘর স্থাপনের বিষয়ে সত্যিকারের অগ্রগতি হয়নি। 

১৭৯৩ সালের ১০ আগস্ট ফ্রান্সের বিপ্লবী সরকার ল্যুভরের গ্র্যান্ড গ্যালারিতে মুজে সন্ট্রাল দ আর্টস বা সেন্ট্রিল মিউজিয়াম অব আর্টসের যাত্রা শুরু করে। আর এভাবেই গোড়াপত্তন হয় পৃথিবী বিখ্যাত ল্যুভর মিউজিয়ামের।

ল্যুভরে সংগ্রহ দ্রুত বাড়তে থাকে। ফরাসি সেনাবাহিনী বিপ্লবী ও নেপোলিয়নের যুদ্ধে পরাজিত অঞ্চল এবং দেশগুলো থেকে শিল্প ও প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী সংগ্রহ করে। ১৮১৫ সালে নেপোলিয়নের পরাজয়ের পরে এই লুণ্ঠিত শিল্পের বেশির ভাগই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে ল্যুভরের বর্তমান মিসরীয় পুরাকীর্তি সংগ্রহ এবং অন্যান্য বিভাগ নেপোলিয়নের বিজয়ের জন্য অনেক বেশি ঋণী।

১৯ শতকে জাদুঘরে নতুন দুটি উইং বা অংশ সংযুক্ত হয়। কয়েকটি দালানের সমন্বয়ে ল্যুভর কমপ্লেক্স গড়ে ওঠে ১৮৫৭ সালে, তৃতীয় নেপোলিয়নের শাসনামলে।

ল্যুভরে ফরাসি বিভিন্ন ভাস্কর্য১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে, গ্র্যান্ড ল্যুভর, যা জাদুঘরটি আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচিত, বড় ধরনের পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। আধুনিক জাদুঘরের সুযোগ-সুবিধা যোগ করার পাশাপাশি হাজার হাজার বর্গমিটার নতুন প্রদর্শনী স্থান খোলা হয়েছে।

চীনা-আমেরিকান স্থপতি আই এম পেই নেপোলিয়ন চত্বরের কেন্দ্রে ইস্পাত ও কাচের সমন্বয়ে একটি পিরামিড তৈরি করেন। অবশ্য কেউ কেউ এতে ল্যুভরের মূল কাঠামো নষ্ট হয়েছে বলে মনে করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

১৯৯৩ সালে, জাদুঘরের ২০০তম বার্ষিকীতে, পূর্বে ফরাসি অর্থ মন্ত্রণালয়ের দখলে থাকা একটি পুনর্নির্মিত শাখা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। আর এর মাধ্যমে পুরো ল্যুভর জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

পরিবারের সামনে পুলিশ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতা-কর্মী আটক

নয়াদিল্লি হাসিনা আমলের দৃষ্টিভঙ্গিই ধরে রেখেছে: ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বিমসটেক সম্মেলনে ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি বৈঠক হচ্ছে

গ্রেপ্তার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মী আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত