রজত কান্তি রায়, ঢাকা
‘বেতাজ বাদশা’ শব্দবন্ধটির ব্যঞ্জনা গভীর। সাহিত্যের দুনিয়ায় এর ব্যবহার হরহামেশা দেখা যায় না। কিন্তু মির্জা গালিবের বেলায় এর ব্যবহার চোখে পড়ে প্রচুর। শুধু তা-ই নয়। অনুভবের দুনিয়ায় তাঁকে দেওয়া হয় এক উচ্চতর আসন। কেউ কেউ অবশ্য অনুভবের ঈশ্বর মানেন তাঁকে, এমনি মানবীয় অনুভব তাঁর!
২৭ ডিসেম্বর ছিল শব্দ ও অনুভবের সাম্রাজ্যে মুকুটহীন বাদশা মির্জা গালিবের জন্মদিন। আজ থেকে ২২৫ বছর আগে আগ্রায় জন্মেছিলেন গালিব। তার পরের সময়গুলো শুধুই তাঁর। এখনো মানুষ আওড়ে চলেছে তাঁকে।
‘দাস্তাম্বু’ ছিল মির্জা গালিবের সঙ্গে আমার সংযোগের একমাত্র পথ। সিপাহি বিদ্রোহ, রক্ত, মৃত্যু আর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সে আখ্যান নিজেই লিখেছিলেন গালিব। বাংলা অনুবাদে তাঁর অধরা মাধুরী এসে পৌঁছেছিল হাতে। আর কিছু নেই। সেই আশির দশকে পারিবারিক লাইব্রেরিতে আবু সয়ীদ আয়ুবের গালিব-সম্পর্কিত বই চোখে পড়েছিল। কিন্তু সে স্মৃতি ধূসর। এখন অবশ্য আর খেদ নেই তেমন। গালিবের গজল এখন জাভেদ হুসেনের অনুবাদে মলাটবন্দী। তরতাজা। সুস্বাদু। বলা চলে, নতুন করে বাংলা ভাষার পাঠকদের জন্য মির্জা গালিব আওড়ানোর পথ করে দিয়েছেন জাভেদ হুসেন।
জাভেদ হুসেনের অনুবাদে প্রাণ আছে। এর কারণ কী? সে এক বিস্তর বিষয়। মূল কথা হলো, ভাষার ওপর দখল এবং বোধের গভীরতা। যতটুকু বুঝেছি, উর্দু ও ফারসি ভাষা থেকে অনুবাদের বিষয়টিতে তিনি আনন্দ পান। সে আনন্দের ছিটেফোঁটা পাঠকের কাছে আসে।তাতেই আমাদের আনন্দ।
ভাষা, তার রাজনীতি, ক্ষমতা এবং তার পালাবদলে ভারত উপমহাদেশের ভাষার বাঁকবদল, গত চার বছরে এসব বিষয়ে বিস্তর আলাপ হয়েছে আমাদের। তাঁর উর্দু ও ফারসি অনুবাদ পড়তে গেলে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। বিবেচনায় রাখতে হবে, জাভেদ হুসেন সেই কাতারের মানুষ, যাঁরা ভাষাকে বিবেচনা করেন মানুষের অনুভবের জায়গা থেকে, বৃত্তবন্দী ও বিভেদের রাজনীতির জায়গা থেকে নয়। এই বিস্তৃত উপমহাদেশের একাধিক ভাষা তাঁর আয়ত্তে। গালিব বুঝতে গিয়ে তিনি যখন রবীন্দ্রনাথ কিংবা রাধারমণে আশ্রয় নেন, অথবা মাতাল রাজ্জাকের গানের সঙ্গে গালিবের তুলনা করেন, তখন বুঝতে হয় গালিব শুধু গালিব নন। গালিব এই সংস্কৃতি ও ভাষা-পরিবারেরই সদস্য। ফলে তাঁর অনুবাদ ঝরঝরে ও সাবলীল।
ভূমিকা, বর্ণান্তর ও উচ্চারণ প্রসঙ্গে, উর্দু গজল এবং ফারসি গজল–বইটিকে এই চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, এখানে রাখা হয়েছে গালিবের বাছা বাছা উর্দু ও ফারসি গজল। ফলে পাঠকের জন্য বুঝতে সুবিধা হয়েছে, কোন ভাষার গমক ও ঠমক কেমন। তা থেকে বাংলাটা কেমন হয়েছে।
বিষয়টিকে এভাবে বলা ভালো, এ এক আশ্চর্য সমাপতন। বইটির যে অবয়ব এখন আমরা দেখি, সে নকশা বেশ পরের। সে জন্যই হয়তো সমাপতন শব্দটি ব্যবহার করা যথাযথ। উর্দু ও ফাসরি ভাষা থেকে মির্জা গালিবের গজলের অনুবাদ করেছেন জাভেদ হুসেন। সে বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী মিস্ত্রী। প্রকাশনার জগতে একে আশ্চর্য সমাপতনই বলতে হয়। বইটির আকার ও অঙ্গসজ্জায় বেশ পরিবর্তন এনেছিলেন সব্যসাচী মিস্ত্রী।
মির্জা গালিবের গজল
ভাষান্তর: জাভেদ হুসেন
প্রচ্ছদ: সব্যসাচী মিস্ত্রী
প্রকাশকাল: ২০১৯
পঞ্চম মুদ্রণ: ২০২২
প্রকাশক: প্রথমা
মূল্য: ৩০০ টাকা
‘বেতাজ বাদশা’ শব্দবন্ধটির ব্যঞ্জনা গভীর। সাহিত্যের দুনিয়ায় এর ব্যবহার হরহামেশা দেখা যায় না। কিন্তু মির্জা গালিবের বেলায় এর ব্যবহার চোখে পড়ে প্রচুর। শুধু তা-ই নয়। অনুভবের দুনিয়ায় তাঁকে দেওয়া হয় এক উচ্চতর আসন। কেউ কেউ অবশ্য অনুভবের ঈশ্বর মানেন তাঁকে, এমনি মানবীয় অনুভব তাঁর!
২৭ ডিসেম্বর ছিল শব্দ ও অনুভবের সাম্রাজ্যে মুকুটহীন বাদশা মির্জা গালিবের জন্মদিন। আজ থেকে ২২৫ বছর আগে আগ্রায় জন্মেছিলেন গালিব। তার পরের সময়গুলো শুধুই তাঁর। এখনো মানুষ আওড়ে চলেছে তাঁকে।
‘দাস্তাম্বু’ ছিল মির্জা গালিবের সঙ্গে আমার সংযোগের একমাত্র পথ। সিপাহি বিদ্রোহ, রক্ত, মৃত্যু আর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সে আখ্যান নিজেই লিখেছিলেন গালিব। বাংলা অনুবাদে তাঁর অধরা মাধুরী এসে পৌঁছেছিল হাতে। আর কিছু নেই। সেই আশির দশকে পারিবারিক লাইব্রেরিতে আবু সয়ীদ আয়ুবের গালিব-সম্পর্কিত বই চোখে পড়েছিল। কিন্তু সে স্মৃতি ধূসর। এখন অবশ্য আর খেদ নেই তেমন। গালিবের গজল এখন জাভেদ হুসেনের অনুবাদে মলাটবন্দী। তরতাজা। সুস্বাদু। বলা চলে, নতুন করে বাংলা ভাষার পাঠকদের জন্য মির্জা গালিব আওড়ানোর পথ করে দিয়েছেন জাভেদ হুসেন।
জাভেদ হুসেনের অনুবাদে প্রাণ আছে। এর কারণ কী? সে এক বিস্তর বিষয়। মূল কথা হলো, ভাষার ওপর দখল এবং বোধের গভীরতা। যতটুকু বুঝেছি, উর্দু ও ফারসি ভাষা থেকে অনুবাদের বিষয়টিতে তিনি আনন্দ পান। সে আনন্দের ছিটেফোঁটা পাঠকের কাছে আসে।তাতেই আমাদের আনন্দ।
ভাষা, তার রাজনীতি, ক্ষমতা এবং তার পালাবদলে ভারত উপমহাদেশের ভাষার বাঁকবদল, গত চার বছরে এসব বিষয়ে বিস্তর আলাপ হয়েছে আমাদের। তাঁর উর্দু ও ফারসি অনুবাদ পড়তে গেলে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে। বিবেচনায় রাখতে হবে, জাভেদ হুসেন সেই কাতারের মানুষ, যাঁরা ভাষাকে বিবেচনা করেন মানুষের অনুভবের জায়গা থেকে, বৃত্তবন্দী ও বিভেদের রাজনীতির জায়গা থেকে নয়। এই বিস্তৃত উপমহাদেশের একাধিক ভাষা তাঁর আয়ত্তে। গালিব বুঝতে গিয়ে তিনি যখন রবীন্দ্রনাথ কিংবা রাধারমণে আশ্রয় নেন, অথবা মাতাল রাজ্জাকের গানের সঙ্গে গালিবের তুলনা করেন, তখন বুঝতে হয় গালিব শুধু গালিব নন। গালিব এই সংস্কৃতি ও ভাষা-পরিবারেরই সদস্য। ফলে তাঁর অনুবাদ ঝরঝরে ও সাবলীল।
ভূমিকা, বর্ণান্তর ও উচ্চারণ প্রসঙ্গে, উর্দু গজল এবং ফারসি গজল–বইটিকে এই চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, এখানে রাখা হয়েছে গালিবের বাছা বাছা উর্দু ও ফারসি গজল। ফলে পাঠকের জন্য বুঝতে সুবিধা হয়েছে, কোন ভাষার গমক ও ঠমক কেমন। তা থেকে বাংলাটা কেমন হয়েছে।
বিষয়টিকে এভাবে বলা ভালো, এ এক আশ্চর্য সমাপতন। বইটির যে অবয়ব এখন আমরা দেখি, সে নকশা বেশ পরের। সে জন্যই হয়তো সমাপতন শব্দটি ব্যবহার করা যথাযথ। উর্দু ও ফাসরি ভাষা থেকে মির্জা গালিবের গজলের অনুবাদ করেছেন জাভেদ হুসেন। সে বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী মিস্ত্রী। প্রকাশনার জগতে একে আশ্চর্য সমাপতনই বলতে হয়। বইটির আকার ও অঙ্গসজ্জায় বেশ পরিবর্তন এনেছিলেন সব্যসাচী মিস্ত্রী।
মির্জা গালিবের গজল
ভাষান্তর: জাভেদ হুসেন
প্রচ্ছদ: সব্যসাচী মিস্ত্রী
প্রকাশকাল: ২০১৯
পঞ্চম মুদ্রণ: ২০২২
প্রকাশক: প্রথমা
মূল্য: ৩০০ টাকা
আকাশি রঙের বাড়ি। দোতলায় দুটি কক্ষে আলো জ্বলছে। সন্ধ্যার আবছা আঁধারে ছেয়ে আছে বাড়িটির চারদিকের গাছগুলো। সন্ধ্যার নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। বাড়ির সামনে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় জলাশয়ে প্রকৃতির এই মোহনীয় ছবি প্রতিফলিত হয়েছে।
২ দিন আগেচারুশিল্প হচ্ছে মানুষের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম। একটি ছবি একটি বিপ্লবের উন্মেষ ঘটাতে পারে। ছবি শুধু বিনোদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি বিপ্লবের বার্তাও নিয়ে আসে।
১৩ দিন আগেআপনি যে বয়সেরই হোন না কেন, এই বই পড়লে তারুণ্যশক্তিকে অনুভব করবেন, অনুপ্রাণিত হবেন। নতুন শুরুর একটা তাগিদ পাবেন। এই তরুণদের প্রত্যেকের মতো আপনিও বলে উঠবেন—সব সম্ভব! এই বইয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্ম নেওয়া অবহেলিত অবস্থা থেকে সাফল্যের শীর্ষে যাওয়ার পথচলার গল্প উঠে এসেছে। প্রায় চার শ পৃষ্ঠার বইটির দাম
২০ দিন আগেপ্রকাশনা সংস্থা ‘ঐতিহ্য’ তার দুই যুগের পথচলা (২০০০-২০২৪) স্মরণীয় করে রাখতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দশ দিনব্যাপী ‘ঐতিহ্য বই উৎসব ২০২৪’ আয়োজন করেছে। আজ ২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় যৌথভাবে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক-গবেষক শারমিন আহমদ এবং তরুণ
২০ দিন আগে