Ajker Patrika

বাণ্যিজ্যিক বনায়নের কারণে পাহাড়ে কমছে জুম চাষ

প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি
বাণ্যিজ্যিক বনায়নের কারণে পাহাড়ে কমছে জুম চাষ

খাগড়াছড়ির বেশীরভাগ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বেশীর ভাগ মানুষ জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। তবে পাহাড়ে রাবার বাগান, সেগুনসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক বনায়নের কারণে জুম চাষের পরিমান কমেছ বলে জানান জুম চাষীরা।

একাধিক জুম চাষীর সাথে কথা বলে জানা যায়, অতীতে এক পাহাড়ে জুম চাষ করার পর ১০ থকে ১৫ বছর পর সেই পাহাড় জুমের আবাদ করা হত। বাধ্য হয়ে মাত্র ২ থেকে ৩ বছর পর একই পাহাড়ে জুমের আবাদ করা হচ্ছে। উপর্যপুরি ও বিরতিহীনভাবে জুম চাষাবাদ হওয়ায় কারণে কমছে ভূমির উর্বরতা।

এছাড়া বছরের পর বছর জুমচাষ করলেও সরকারিভাবে কোন ধরনের কৃষি প্রনোদনা পায় না বলে জানিয়েছে জুমচাষীরা। তারা সরকারিভাবে প্রনোদনা চায়।

এদিকে জুমের ফলন বাড়াতে আধুনিক পদ্ধতি জুম চাষ করার পরার্মশ দিয়েছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা।

জেলার দীঘিনালার নয়মাইল এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য হতেন ত্রিপুরা জানান, এখানে কেউ সরকারিভাবে সার, বীজ, কীটনাশকসহ কোন সুবিধা পায়না। ফলে সনাতন প্রক্রিয়ায় জুম চাষ করার কারণে উৎপাদনও বাড়ছে না। সরকার জুমচাষীদের কৃষি ঋণসহ অন্যান্য সুবিধা দিলে জুমচাষীরা টিকে থাকতে পারবে।

পাহাড়ি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.মুন্সী রাশীদ আহমদ বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলের মাটি অম্লীয় (এসিড) হওয়ায় জমিতে চুন ও সার প্রয়োগ করলে জুমের উৎপাদনশীলতা বাড়বে। এছাড়া জুমের ফলন শেষে জুমের মাটিক্ষয় রোধে ডাল জাতীয় সবুজ ফসল চাষ করতে হবে। এতে  মাটির উর্বরতাবাড়বে এবং জুমের ফলনও বাড়বে। ’

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে চাকমা,মারমা ও ত্রিপুরাসহ প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বসবাস। এদের বেশীর ভাগই পাহাড়ের সনাতনী জুম চাষের উপরনির্ভরশীল। অন্তত ২শ বছরের বেশী সময় ধরে এরা বংশ পরম্পরায় এই পেশায় জড়িত। জুমে ধান, হলুদ, মারফা, মিষ্টি কুমড়ো, তিল, ভুট্টা, বরবটিসহ প্রায় ৪০ ধরনের সবজি উৎপাদিত হয়। তিন পার্বত্য জেলায় প্রতিবছর ১২ হাজার হেক্টর জমিতে এই জুমচাষ হয়।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

রাবি প্রতিনিধি  
মহান বিজয় দিবসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ মঙ্গলবার ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
মহান বিজয় দিবসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ মঙ্গলবার ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মহান বিজয় দিবসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে ‘হানাদার হান্ট’ নামে এ কর্মসূচি পালন করে শাখা ছাত্রদল।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিনটি মাটির হাঁড়িতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ লিখে সেখানে জুতা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। জুতা নিক্ষেপ করে যাঁরা হাঁড়িতে লাগাতে পারছেন, তাঁদের চকলেট পুরস্কার দেওয়া হয়।

কর্মসূচির বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘দেশের জনগণের বিরুদ্ধে একাত্তরে রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনীর দোসরেরা (রাজাকার, আলবদর, আলশামস) লাখ লাখ নারীকে ধর্ষণ করেছে এবং নির্মমভাবে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে, লাল-সবুজের পতাকার জন্য যাঁরা জীবন দিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন, সে সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকেও পাকিস্তানি দোসরেরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আজ মহান বিজয় দিবসে এসব ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানাতে কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।’

সুলতান আহমেদ রাহী আরও বলেন, এ কর্মসূচির মাধ্যমে যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, লাল-সবুজের পতাকাকে অস্বীকার করে, এখনো পাকিস্তানপন্থী চেতনা ধারণ করে এবং বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা হয়েছে।

ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল মিঠু বলেন, ‘একাত্তরের ইতিহাসে যারা ঘাতক দালাল ছিল, যারা পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তা করে এ দেশের মানুষকে হত্যা করেছে, হত্যার পেছনে কলকাঠি নেড়েছে, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ এবং রাজাকারদের চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যেই আজকের এই উদ্যোগ।’

মাহমুদুল মিঠু আরও বলেন, ‘একাত্তরের দেশদ্রোহী রাজাকারদের যাদের ক্ষমা করা হয়েছিল, সেটি ছিল একটি চরম ভুল। সেই ভুলের মাশুল আজও আমাদের দিতে হচ্ছে। কারণ গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে তারাই নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভিন্ন ন্যারেটিভ তৈরি করছে।’

এ সময় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সর্দার জহুরুল ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগসহ অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাওনা টাকা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে হত্যা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে পাওনা টাকা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে স্বাধীন পাল (২০) নামের এক তরুণকে হত্যার ঘটনা অভিযোগ উঠেছে এক কিশোরের (১৬) বিরুদ্ধে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের মৃর্ত্তিঙ্গা চা-বাগানে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাওনা টাকা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জের ধরে পার্শ্ববর্তী রামচন্দ্রপুর গ্রামের ওই কিশোর স্বাধীনের বুকের বাঁ পাশে ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে স্বাধীন। তাকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আউয়াল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পুলিশ এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত কিশোরকে আটক করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মেলায় মিলল ৬০ কেজি ওজনের কচু

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
৬০ কেজি ওজনের কচু। ছবি: আজকের পত্রিকা
৬০ কেজি ওজনের কচু। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের নান্দাইলে বিজয় মেলায় উপজেলা চত্বরে দেখা মিলেছে ৬০ কেজি ওজনের এ কচুর। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে নান্দাইল উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় মেলায় এটি দেখা যায়। কৃষক শহীদুল্লাহ্ তাঁর নিজ জমিতে উৎপাদিত কচুটি বিজয় মেলায় প্রদর্শন করেন। কচুটি দেখতে ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।

চাষি শহীদুল্লাহ্‌ কচুটির দাম হাঁকিয়েছেন আড়াই হাজার টাকা। মেলা শেষে এটি বিক্রি করে দেবেন তিনি। শহীদুল্লাহ্ উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের কুরাটি গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, তিনি তাঁর ১০ শতাংশ জমিতে বিলাতি কচু চাষ করেছেন। দেড় বছর যাবৎ এমন কচু নান্দাইল ও পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারোবাড়ি বাজারে বিক্রি করছেন।

চাষি শহীদুল্লাহ্‌ বলেন, দেড় বছর আগে কচু চাষ করেছিলাম। ১০ শতাংশ জায়গায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। এখনো অনেক কচু রয়েছে। কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে আবারও চাষ করব।

চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের ধুরুয়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই ভূঁইয়া বলেন, বিলাতি জাতের এ কচু ডাঁটাসহ ১২-১৫ ফুট উঁচু হয় এবং কচুর মূল অংশ ৬-৮ ফুট হয়। মেলায় প্রদর্শন করার পর থেকে অনেকেই এই কচু চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাঈমা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এমন বিশাল আকৃতির কচু কৃষক উৎপাদন করেছেন। বিলাতি কচুটি খুব সুস্বাদু। প্রচুর আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং আঁশ থাকে, যা স্বাস্থ্যকর খাবার। তবে বিশাল বড় হওয়ায় একা খাওয়া সম্ভব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গরুতে ধান খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, নারীসহ আহত ৫

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
আহত ব্যক্তিরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত ব্যক্তিরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর বাউফলে গরুতে খেতের ধান খাওয়ায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মদনপুরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চন্দ্রপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে ওই এলাকার জাকির হোসেনের একটি গরু বারেক ঢালীর জমির ধান খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বারেক ঢালী গরুটিকে ধরে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়, যা একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে বারেক ঢালী (৬০), তাঁর ছেলে সায়েম ঢালী (১৮), নাতি সোহাগ গাজী (১৪), স্ত্রী রেহেনা বেগম (৫০) এবং অপর পক্ষের মো. সোহাগ (৩৫ আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাকির হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন ব্যক্তি বারেক ঢালীর বাড়িতে হামলা চালায়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সায়েম ঢালী ও সোহাগ গাজীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাকির হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ঘটনার বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত